কলকাতা: রাজ্যে ইতিমধ্যেই কোভিডের (Covid 19) চোখ রাঙানি ! এদিন সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি পরিস্থিতি-সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে কথা বললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একদিকে তিনি উদ্বিগ্ন রাজ্যের কোভিড মোকাবিলা ব্যবস্থা নিয়ে। পাশাপাশি 'করোনার দোহাই দিয়ে নির্বাচন আটকে রাখা' নিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
'পার্কস্ট্রিটে মমতার জন্মের আগে থেকে লোক আসে'
এদিন তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, 'পার্কস্ট্রিটে মমতার জন্মের আগে থেকে লোক আসে। আপনি সেটাকে সিস্টেমে আনুন। যাতে পদপিষ্ট না হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। গঙ্গাসাগর মেলায় লোক পদপিষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়। আপনি সেটা যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনি সেটা করতে পারেনা। করোনা এখনও ভারতে সংক্রমণের মতো জায়গায় আসেনি। বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও দেখা গিয়েছে। মানুষকে বোঝানো উচিত। মাস্ক পরা উচিৎ। ভিড় ভাড় চলতেই থাকবে। মানুষের বেরনোর প্রবণতা বেড়েছে। কেন্দ্র চেষ্টা করছে। রাহুল গাঁধী ভারত জড়ো নিয়ে রাজনীতি করছেন। কোভিড বাড়লে এরাই আবার মোদিকে দায়ী করবে। গোটা বিশ্বকে মোদী দেখিয়ে দিয়েছেন, সঙ্কট কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়। মানুষকে কিভাবে খাদ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।'
ভ্যাকসিন ভাঁটা
এদিকে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে ভ্যাকসিন ভাঁটা। করোনা নিয়ে নতুন উদ্বেগের মধ্যে বাগবাজার ভ্যাকসিন স্টোরে অমিল কোভিশিল্ড ও করবেভ্যাক্স ভ্যাকসিন। প্রিকশনারি ডোজ হিসেবে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অথচ এই পরিস্থিতিতে বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোরে মজুত নেই কোভিশিল্ড ( Covishield ) ও করবেভ্যাক্স ( Covaxin ) ভ্যাকসিন। তবে কোভ্যাক্সিনের ৪৫ হাজার ৯৭০টি ডোজ মজুত রয়েছে। বাগবাজার সেন্ট্রাল স্টোরেজে ভ্যাকসিন ভাঁটা ইস্যুতে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'কেন্দ্র পাঠাচ্ছে। এখানে নেই কেন? নিচ থেকে ওপর খতিয়ে দেখা উচিত। কেন্দ্র কোথাও অভাব রাখেনি। চীন ভুয়ো ভ্যাকসিন দিয়েছে। তাই বিপদ বেড়েছে। আমাদের রাজ্যে ভুয়ো সরকার চলছে। শুধু আওয়াজের ওপর আছে। অনেকে এখনও একটাও ভ্যাকসিন নেননি। তাদের সরকারের বোঝান উচিত।'
'করোনার দোহাই দিয়ে নির্বাচন আটকে রাখা'
অপরদিকে, একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকে বাইশেও এই করোনাভাইরাস ইস্যুতে একাধিকবার ভোট পিছিয়েছে। হয়েছে উপনির্বাচন। হয়েছে জনস্বার্থ মামলাও। আর এবার সেই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই নির্বাচন ইস্যুতে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, 'সব দিক দিয়ে রাজ্য পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই ভোটও পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। করোনার দোহাই দিয়ে নির্বাচন আটকে রাখা। কারণ জানে, ভোট হলেই তৃণমূল হারবে। এমন পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে, যাতে ওরাই ক্ষমতায় থাকতে পারে। মেডিক্যাল কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বত্র একই অবস্থা। অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন কেন? যে সরকার মেলা, খেলা সব চালু রেখেছে, ভয়ে নির্বাচন করছেন না। তৃণমূল এখন জনবিচ্চিন্ন। তাই ভয়ে নির্বাচন করছে না।'
আবাস দুর্নীতি
তবে করোনার পাশাপাশি বিজেপির অন্তর্কলহ নিয়েও কথা বলেন এদিন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, 'বারাসতে গণ ইস্তফা। চিন্তার বিষয়। খতিয়ে দেখা হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা ঘন ঘন আসছেন। ' আবাস দুর্নীতি নিয়েও তোলেন প্রসঙ্গও। আবাস যোজনায় প্রশাসন কড়া হতেই ৫ লাখ ফর্ম সারেন্ডার । তিনি বলেন, 'কোথায় দুর্নীতি নেই? আমরা বিডিও অফিস ঘেরাও করছি। কেন্দ্রীয় অফিসাররা আসছেন। তাতেই এতো ফলস বেড়িয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে, বিজেপি ব্যবস্থা নেবে। শুধু বললে তো হবে না। প্রমাণ দিন। আর আমরা বলছি, আপনার দলের যে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম ভুয়ো ভাবে ঢুকে আছে, দম থাকলে তদন্ত করুন।'
আরও পড়ুন, কলকাতায় কোভিড পজিটিভ ব্রিটিশ পর্যটক ! বিমানবন্দর থেকে নেওয়া হল বেলেঘাটা আইডি-তে
নন্দনে দেখানো হয়নি দেব-মিঠুনের প্রজাপতি, কী বললেন দিলীপ ঘোষ ?
দিলীপ ঘোষ বলেন, 'যেন বাপের সম্পত্তি। পার্টির সম্পত্তি। মিসইউজ চলছে। যাদের নামে লোক হলে আসে, তাদের দুরে রাখার চেষ্টা চলছে। রাজ্যের সুপার স্টার মিঠুন চক্রবর্তী। বহুদিন পর একটা বাংলা ছবি করলেন। লোকে মুখিয়ে আছে। এতো সুন্দর হল (নন্দন)। সেখানে শো দেওয়া হল না। তাদেরই সাংসদ সেখানে অন্যতম তারকা। সেটাই তো। মিঠুনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে বলে, তাকেও কোণঠাসা করার চেষ্টা। বয়কটের হুমকি। দেবকে তৃণমূল ব্যবহার করেছে। একসময় সিনেমা রিলিজ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। জোর করে টিকিট দিয়ে ওকে সাংসদ করেছে। এদের কাছে আর কিছু আশা করা যায়না। এরা রাজনীতি ছাড়া আর কিচ্ছু বোঝে না।'