কলকাতা: ধর্মতলায় (Dharmatala) মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে ১০৯ দিনে পড়ল রাজ্য সরকারি গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান। এতদিন ধরে ধর্না চললেও রাজ্য সরকারের তরফে সাড়া মেলেনি বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পথ নাটিকার মাধ্যমে নিজেদের দাবিদাওয়া পেশ করলেন রাজ্য সরকারি গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা (Group D Job Seeker)। 


প্রসঙ্গত,  দুর্গাপুজোর পর কালীপুজোও কেটেছে চাকরিপ্রার্থীদের রাস্তায় বসে। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্নায় রয়েছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা । উৎসবের মরশুমেও ওঁদের জীবনে শুধুই অন্ধকার। পরিবার-পরিজন ছেড়ে পথের ধারেই কাটছে দিন। তবুও হকের চাকরির দাবিতে আন্দোলনে অনড় SSC চাকরিপ্রার্থীরা। এবার পুজোয় রাজ্যবাসীর মনে কাঁটার মতো বিঁধেছে চাকরিপ্রার্থীদের রাস্তায় বসে আন্দোলন। এই সমস্যার সমাধান না হলে মানুষের মনে শান্তি আসবে না। সম্প্রতি এই মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। ভরা পুজোর মাঝে যখন প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ভিড়, রাস্তাঘাটে আলোর রোশনাই, তখন ভিন্ন দৃশ্য শহরের একপ্রান্তে।


উৎসবের চিহ্নটুকুও নেই, আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের মনে। কারোর চোখে জল, কারোর আবার কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে আসছে। ঝাপসা হচ্ছে চোখ, পরিবারের কথা বলতে গিয়ে ধরে রাখতে পারছেন না চোখের জল। বঞ্চনার অভিযোগে উৎসবের দিনেও রাস্তায় অবস্থান করেন তাঁরা। ঘর-বাড়ি ভুলে নিয়োগের দাবিতে সরব তাঁরা। দুর্গাপুজো কেটেছে রাস্তায় বসে। কালীপুজোয় গোটা শহর আলোর উত্‍সবে মাতলেও, অন্ধকারেই রইলেন চাকরিপ্রার্থীরা। ভাইফোঁটা নিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এদিন  SLST-র একজন চাকরিপ্রার্থী। ভাইফোঁটার দিনেও সেই অন্ধকারেই ছিলেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা। 


নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের এই অবস্থান আন্দোলনের জল গড়িয়েছে রাজনীতির আঙিনাতেও।  SSC-কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী। চাকরিপ্রার্থীরা একের পর এক বৈঠক করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের নিয়োগের দাবির সুরাহা হয়নি।  আলোর উত্‍সবের শহরে পরিবার ছেড়ে ম্লান মুখে রাজপথের এককোণে বসে ছিলেন তাঁরা। সম্প্রতি চাকরির দাবিতে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) বাড়ির কাছে বিক্ষোভ দেখান নার্সিংয়ের চাকরিপ্রার্থীরা। হাজরা রোডে বসে পড়েন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, সরকারি হাসপাতালে ৬ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা হয়েছিল। ২০২১-এর এপ্রিলে ইন্টারভিউ হয়। ওই বছরই মে মাসে প্যানেল প্রকাশ হয়। জুলাইয়ে প্যানেল বাতিল করে, সংশোধিত প্যানেল প্রকাশ করা হয়। ৬ হাজার শূন্যপদ থাকলেও, প্যানেলে নাম থাকে সাড়ে ৩ হাজার।ফলে সেই প্যানেলেও প্রচুর অস্বচ্ছতা ছিল বলে অভিযোগ। কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্যভবন থেকে এলিজিবল লিস্ট বা যোগ্যপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু, পরবর্তীকালে জানানো হয় ওই তালিকার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে।


আরও পড়ুন, 'বিজেপিকে ঝেঁটিয়ে বাংলাদেশে পার করে দেব', হুমকি জ্যোতিপ্রিয়-র


 বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলার পর, পুলিশ এসে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলেন। কিন্তু, চাকরিপ্রার্থীরা অনড় থাকায় তাঁদের জোর করে তুলে দেওয়া হয়। কার্যত টেনেহিঁচড়ে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে। প্রায় ৪০ জন আন্দোলনকারীকে আটক করে পুলিশ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বারবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে, ওঁকেই বুঝতে হবে রাজ্যের এখন বড় সমস্যা চাকরি, বিজেপি ক্ষমতায় এলেই চাকরি হবে।’’