ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বগটুই গ্রামে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত লালন শেখকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃত লালন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপ প্রধান ভাদু শেখের ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছিল।


কী অভিযোগ:
সিবিআই সূত্রে দাবি, গত ২১ মার্চ, ভাদু খুনের পর, বগটুই গ্রামে যে অগ্নি সংযোগ ও ৮ জনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে, সেই তাণ্ডবের নেতৃত্ব দিয়েছিল ভাদু ঘনিষ্ঠ লালন।


বগটুইয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। সেই চার্জশিটে নাম ছিল ৮ জনের। সেখানে নাম ছিল বিকির আলি, নূর আলি, জামিরুল শেখ, হাফিজ শেখ-সহ ৮ জনের। বগটুইয়ের গ্রামে হামলার ঘটনায় এরা প্রত্যেকেই জড়িত ছিল বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা ছিল। 


কী ঘটেছিল?
চলতি বছরে ২১ মার্চ রাতে খুন হন রামপুরহাট বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতে উপপ্রধান ভাদু শেখ। তার পর ওই গ্রামের একের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অগ্নি সংযোগের ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় একাধিক জনের। ঘটনাস্থল থেকেই ১০ জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনায় তীব্র শোরগোল পড়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শাসক দলকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছিল বিরোধীরা। পরে ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করা হয় সরকারের তরফে। বগটুইকাণ্ডের পরদিন অর্থাৎ ২২ মার্চ পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের করে। পরে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। ভাদু শেখ খুন এবং বগটুইয়ে অগ্নিকাণ্ড-দুটিরই তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে এখনও শাসক-বিরোধী তরজা চলে। বীরভূমের গ্রামে এমন ঘটনা প্রশাসনের গাফিলতির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন বিরোধীরা। রাজ্যের পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত করার সময়, তদন্তে গাফিলতির অভিযোগও তুলেছিলেন বিরোধীরা। 


ভাদু শেখ খুনেও গ্রেফতার:
কদিন আগেই ভাদু শেখ খুনে মূল অভিযুক্তকে  গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ধৃতের নাম ফয়জুল খান ওরফে পলাশ। ঘটনার তদন্তভার নেওয়ার পর দাখিল করা সিবিআইয়ের চার্জশিটে (CBI Chargesheet) এই পলাশই ছিল মাস্টারমাইন্ড। সিসিটিভি ক্যামেরার (CCTV Camera) ফুটেজে পলাশকে বোমা ছুড়তে দেখা যায়। ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল পলাশ ওরফে ফয়জুল। নভেম্বরে বগটুই থেকেই তাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।


আরও পড়ুন: '১২ বছর পর সরকারের মনে হল মানুষ কিছু পায়নি', কটাক্ষ দিলীপের