কলকাতা: নেতাজির জন্মদিনে, আন্দামান ও নিকোবরের একুশটি অনামী দ্বীপের নাম রাখা হয়েছে বীর সেনাদের নামে। আর এহেন আবহেই নাম না করে দ্বীপের নামকরণ বিতর্কে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, 'শহিদ দ্বীপ, স্বরাজ দ্বীপের নাম, নেতাজি দিয়েছিলেন, অন্য কেউ দেননি।' 


'যোজনা কমিশন তৈরি করেছিলেন নেতাজি, তুলে দেওয়া হয়েছে, দেশে কোনও পরিকল্পনা নেই। দেশের নেতাকে কারও কাছে সার্টিফিকেট নিতে হয় না। অতীতের রাজনীতিতে মাধুর্য ছিল। রাস্তা দিয়ে গেলে মানুষ কিছু বলবে না, তা নয়, ক্ষোভ থাকতেই পারে। মানুষের কিছু জানানোকে বিক্ষোভ বলে না। দিদির দূত কর্মসূচিতে মানুষের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে নাম না করে বার্তা মমতার।  উল্লেখ্য, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরমবীর চক্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত ২১ জন সেনার নামে ওই দ্বীপগুলির  নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২১ সালে, ২৩ জানুয়ারি, নেতাজির জন্মদিনটিকে পরাক্রম দিবস বলে ঘোষণা করেছিল মোদি সরকার। এর আগে, রস আইল্য়ান্ডকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দ্বীপ এবং নীল ও হ্য়াভলককে শহিদ ও স্বরাজ দ্বীপ নাম দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


অপরদিকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'যত পারছে এজেন্সি লাগাচ্ছে, গণতন্ত্রে এসবের জায়গা নেই। অনেকে এজেন্সির ভয়ে পালিয়ে গিয়েছে। দেশ বড় অসহায়, বাংলা কোনওমতে সামলাচ্ছি।' প্রসঙ্গত, রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি, আবাস দুর্নীতি, গরুপাচার মামলা, ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা-সহ একের পর এক দুর্নীতে জেরবার বাংলা। এহেন পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রায় অধিকাংশ দুর্নীতির মামলায় তদন্তে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। জেলে গিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মন্ডল সহ আরও একাধিক হেভিওয়েট। আর নেতাজির জন্মদিনে, নাম না নিয়ে সেই ঘটনারই উষ্মা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।


আরও পড়ুন, 'RSS-র আইডিওলজিতে বিশ্বাসই করতেন না নেতাজি', প্রতিক্রিয়া কুণালের


অপরদিকে, এদিন সুজন চক্রবর্তী টুইটে করে বলেন, 'নেতাজিকেও দখলদারির মোদি-দিদির অপচেষ্টা। দেশনায়কের জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণা  এবং দেশপ্রেম দিবস পালন করা হচ্ছে না কেন ? নেতাজি সুভাষ ডকের মাথায় কলকাতা পোর্টের শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি নামকরণ হল কেন ? ইতিহাসকে অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই। বিজেপি-তৃণমূলের ছক। ধরে পড়েছে।'প্রসঙ্গত, 'আমাদের দেশের স্বাধীনতার মূল স্থপতি ছিলেন নেতাজি। কিন্তু পরবর্তী কোনও সরকারই তাঁকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি। তাঁকে ব্যবহার করেছে। বিজেপি সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী সেই মর্যাদা, সম্মান দিচ্ছেন, দেশের মানুষও সেটা দেখছে।' নেতাজির জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে একই সুরে দাবি দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীর। আর এরপরেই তোপ দাগলেন কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলকে দুষলেন সুজন চক্রবর্তী।