কলকাতা: বেলেঘাটায় আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় (Beleghata Dacoity) মূল অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যু। বিহারের মুজফ্ফরপুর থেকে উদ্ধার গুলিবিদ্ধ দেহ। মৃতের নাম রাজকুমার রায় ওরফে নীরজ। কী কারণে মৃত্যু ? জানতে তদন্তে পুলিশ (Kolkata Police)।


 মূল অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যু


চলতি বছরের বছরের ২১ জানুয়ারি, বেলেঘাটার সুরাহ্ ইস্ট রোডে মহিলা আইনজীবীর ফ্ল্যাটে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাজকুমার পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন দু’-দু’বার পালায়। গত জুনে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যায় অভিযুক্ত। দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হওয়ার পর, অগাস্টে বিহারের মতিহারী সদর হাসপাতাল থেকেও পালায়। এরপর গতকাল বিহার থেকে ওই দুষ্কৃতীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। কী কারণে মৃত্যু জানতে, কলকাতা পুলিশের তরফে বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।


 বেলেঘাটায় আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতি হয়


গত ২১ জানুয়ারি থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হন পেশায় আইনজীবী এক মহিলা। জানান, ঘটনার দিন বাড়িতেই ছিলেন তিনি। সেই সময় একদল দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে তাঁকে টাকা-সোনা সব বার করে দিতে বলেন। আতঙ্কে সেঁধিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কোনও প্রতিবাদই করেননি। সেই অবস্থায় লক্ষাধিক টাকা এবং সোনার গহনা লুঠ করে ডাকাতের দল। চম্পট দেওয়ার আগে তাকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে জানান। নিগ্রহের শিকার ওই মহিলা সেইসময় পুলিশকে জানান যে, ডাকাতের দল এক নির্মম ভাবে মারধর করে তাকে, যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে।


আরও পড়ুন, 'হকের চাকরি পাওয়ার অধিকার সবার', দাবি দিলীপ-সুজনের, পাল্টা কুণাল


লুঠ, খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে পুলিশ


সেই ঘটনায় লুঠ, খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর পর বিশদে তদন্ত শুরু হয়। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। কিন্তু তদন্তে নেমে গোড়া থেকেই বেশ কিছু জায়গায় হোঁচট খেতে হচ্ছিল তাদের। ধৃতদের বয়ান ঘিরেও ধন্দ তৈরি হচ্ছিল। সেই সংক্রান্তসব তথ্য-প্রমাণ একত্রিত করে সন্দেহ গিয়ে পড়ে মহিলার স্বামীর উপর।  শেষমেশ ওই মহিলার স্বামীকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে পুলিশ। মহিলার স্বামীও পেশায় আইনজীবী।কিন্তু পুলিশের দাবি, তিনি ডাকাতির মূল চক্রী। 


 ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত


পুলিশ জানিয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত সংসারে। অভিযুক্তের ধারণার ছিল, তাঁর স্ত্রীর প্রচুর টাকা রয়েছে, যা কি না কোটির অঙ্কও চাড়িয়ে যায়। সেই মতো ওই টাকা হাতানোর পরিকল্পনা শুরু করেন তিনি। নিয়োগ করেন ভাড়াটে গুন্ডা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। সেই মতো আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সব লুঠ করে নিয়ে যাওয়ার ফন্দি বার করেন। তাঁর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই বাড়িতে হানা দেয় ভুয়ো ডাকাতের দল।