ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: কামড়-বিতর্কে অবশেষে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিল পুলিশ। তদন্ত করবেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সাউথ (২) বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়।
কী যোগসাজশ ছিল, কীভাবে গোটা ঘটনা ঘটল, তদন্ত করবেন তিনি। লেডি কনস্টেবলের সঙ্গেও কথা বলবেন পুলিশ আধিকারিক। রিপোর্ট দেওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে।
দুই তৃণমূল নেতার দুই মত:
কামড় বিতর্কে পুলিশের হয়ে ব্যাট ধরেন তৃণমূল বিধায়ক পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি। তিনি বলেন, 'পুলিশকে কামড়ালে পুলিশ কি রসগোল্লা ছুড়বে?' মেদিনীপুরে দলীয় অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন বিধায়ক, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বৃহত্তর চক্রান্তের অভিযোগও করেন তিনি।
আবার উল্টোমত তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের। তিনি বলেন, 'পুলিশ কনস্টেবলও বলছে তাঁকে কামড়ে দিয়েছে। তবে কারোরও কামড়ানো উচিত নয়। পুলিশ সংযম দেখিয়েছে। একটি ছোট ঘটনায় পুলিশ যে সংযম দেখিয়েছে তা কামড়ে কলঙ্কিত হল। পুলিশ সংযত ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে, তদন্ত করে দেখা উচিত',
মন্তব্য তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্যের সঙ্গে একমত শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও।
কী বললেন অরুণিমা:
এদিন অরুণিমা পাল বলেন, 'আমাদের একটা শান্তিপূর্ণ একটা ডেপুটেশন কর্মসূচি ছিল। আমরা নিরস্ত্র ছিলাম। আমাদের ৩০ জনকে জেলে থাকতে হয়েছিল। প্রমাণ হয়ে গিয়েছে এটা অসত্য। আমরা জামিন পেয়েছি। আমাদের দাবিগুলি ন্যায্য, আমাদের প্রাপ্য। যা ঘটে গেল তা সভ্য সমাজে বেমানান, এগুলো যেন আর না হয়।'
যিনি অভিযুক্ত তাঁর নাম ইভা থাপা। তাঁর অভিযোগ, অরুণিমাই কামড়েছেন। সেই বিষয়ে এদিন অরুণিমা বলেন, 'ওঁর অ্যাগ্রেসিভনেস আগে থেকেই ছিল। আমাদের সঙ্গীদের কাউকে খিমচে দিয়েছেন। আমি দাঁড়িয়েছিলাম। উনি হঠাৎ অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেন। আমি তাঁর প্রতিবাদ করি। কিন্ত ওঁর অ্যাগ্রেসিভনেস কমেনি। আমি বলেছি হেঁটে যাব। তবুও আমায় টানাহিঁচড়ে করতে থাকেন। প্রথমে একবার কামড়ায়, আমি ছুটে বেরিয়ে যাই। পরে আর একজন নীল পোষাকের পুলিশকর্মী আমার সঙ্গে ছিলেন। সেখানে ফের ছুটে এসে কামড়ে দেন ওই পুলিশকর্মী।'
হাসপাতালের প্রেসক্রিপশনেও:
চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পালের হাতে পুলিশের কামড় নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। এবার সরকারি হাসপাতালের প্রেসক্রিপশনেও বলা হল, মানুষের কামড়েই ক্ষত হয়েছে অরুণিমার হাতে। আজ সকালে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাতের ক্ষত পরীক্ষার জন্য আসেন অরুণিমা। তাঁর হাত পরীক্ষা করে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সক লেখেন, হিউম্যান বাইট, অর্থাত্, মানুষের কামড়ের চিহ্ন মিলেছে চাকরিপ্রার্থীর হাতে। অরুণিমাকে ঘটনার পর গ্রেফতার করা হলেও অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের জল প্রকল্পে 'স্বজনপোষণে'-র অভিযোগ, 'শাসক দল'-কে নিশানা শুভেন্দুর