কলকাতা : কার্টুনকাণ্ডের (Cartoon Controversy) ১১ বছর পরে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে (Proffesor Ambikesh Mahapatra) মামলা থেকে অব্যাহতি দিল আলিপুর আদালত (Alipore Court)। ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল, অম্বিকেশ মহাপাত্রর বিরুদ্ধে পূর্ব যাদবপুর থানায় (Jadavpur Police Station) যে এফআইআর হয়েছিল, সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন তিনি।


২০২১-এর ১৪ সেপ্টেম্বর, আলিপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে ব্যঙ্গচিত্র সংক্রান্ত এই মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জানান অম্বিকেশ মহাপাত্র। কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দেন আলিপুরের সিজেএম। এরপর অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র নতুন করে আলিপুর আদালতের অ্যাডিশনাল সেশন জাজের এজলাসে আবেদন জানান।


অবশেষে নিষ্কৃতি, কী প্রতিক্রিয়া


সেই মামলায় রায়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে অম্বিকেশ মহাপাত্রর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছিল, সেই মামলা থেকে তাঁকে নিষ্কৃতি দেওয়া হল। আদালতের রায়ের এই কপি ফেসবুকে পোস্ট করেন অধ্যাপক। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ১১ বছর পরে ব্যঙ্গচিত্রকাণ্ডের ফৌজদারি মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেলাম। রাজ্য পুলিশ, প্রশাসন, শাসকদল এবং দুষ্কৃতীদের বাধা সত্বেও এই জয়। এটা গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতার জয়। 


পরে তিনি জানান, 'রাজ্য সরকার, পুলিশ ও প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে মামলটা জিইয়ে রেখেছিল। কোনও সমর্থন ছিল না এই লড়াইয়ে। কিন্তু যাঁরা মারধর করেছিল, পুলিশের কাছে এফআইআর ও মামলা করে জেলে রাত্রিবাস করতে বাধ্য করেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করলেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাঁদের বিরুদ্ধেও তো ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, নাহলে ন্যায়বিচার কীভাবে হবে?'


কার্টুনকাণ্ডে ঠিক কী হয়েছিল


২০১২ সালের এপ্রিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) ও মুকুল রায়কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র ইমেলে ফরওয়ার্ড করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। যার জেরে তাঁকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। অম্বিকেশ মহাপাত্রর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় পূর্ব যাদবপুর থানায়। যার প্রেক্ষিতে ২০১২-র ১২ এপ্রিল, অম্বিকেশ মহাপাত্র এবং তাঁর প্রতিবেশীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরদিন আদালত তাঁদের জামিন দেয়।


তবে কার্টুনকাণ্ডে অম্বিকেশ মহাপাত্রর গ্রেফতারির প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের (West Bengal Government) বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে মানবাধিকার কমিশন দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি এবং অম্বিকেশ মহাপাত্রকে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করে। যদিও ৯ মাস পরে ২টি সুপারিশই খারিজ করে দেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। 



আরও পড়ুন- মেরামতির কাজের জন্য শনি থেকে সোমবার শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায় বাতিল একাধিক ট্রেন