অরিত্রিক ভট্টাচার্য, ময়ূখঠাকুর চক্রবর্তী ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধান। ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কেএমআরসিএল (KMRCL) সূত্রে খবর, এবারও প্রায় একই পরিস্থিতি। মেট্রোর টানেলে জল ঢুকে মাটি বসে, বাড়িতে ফাটল ধরেছে। সুড়ঙ্গে জল ঢোকা বন্ধ হলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে KMRCL সূত্রে দাবি করা হয়েছে।


বউবাজার মানেই পুরনো কলকাতা। শতাব্দী প্রাচীন বাড়ি। সেখানে ফের নেমে এল বিপদ! নিঃস্ব হয়ে ফের পথে বাসিন্দারা। বারবার এভাবে ঘর ছাড়া হয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।


বাসিন্দাদের অভিযোগ:
দুর্গাপিটুরি লেনের বাসিন্দা শ্যামল মণ্ডল বলেন, 'মেট্রো লোক দেখানো কাজ করেছে।' ওই এলাকারই আরেক বাসিন্দা অভিজিৎ মতিলাল বলেন, 'নয় জেনারেশনের বাস, খালি করা এত সহজ নয়...কিন্তু যেতে হবে। ওরা বলছে সেফটির জন্য। মেট্রো কর্তৃপক্ষ কোনও কাজ করেনি। কোথাও ওরা?' ২০১৯ সালেও এই ধরনের একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন এই দুর্গাপিটুরি লেনের বাসিন্দারা। ২০১৯ সালে জলস্তরে ধাক্কা মারে টানেল বোরিং মেশিন, টানেলে। KMRCL সূত্রে খবর, এবারও প্রায় একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, ২০১৯’এর বিপর্যয়ের পর মাটির তলায় আটকে যায় টানেল বোরিং মেশিন চণ্ডী!! TBM তুলতে চৌবাচ্চা তৈরি করা হয়েছিল। এর ঠিক পিছনের অংশটিই দুর্গাপিটুরি লেন।


KMRCL সূত্রে খবর:
মেট্রোর টানেলে কংক্রিট জয়েন্ট বক্স তৈরি করা হচ্ছিল। ৩৮ মিটারের মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৯ মিটার কংক্রিটের চাদর বসানো হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে ৯ মিটার। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এখানে জলস্তর বেড়েছে। তার ফলে তৈরি হয়েছে ওয়াটার পকেট। মেট্রোর কাজ চলাকালীন এখানেই দেড় মিটার জায়গা জুড়ে ১১টি পকেট দিয়ে টানেলে জল ঢুকতে শুরু করে। সেই জলের সঙ্গে মিশে ধুয়ে যেতে থাকে মাটি ও বালি। ফলে বসে যায় আশপাশের অংশের মাটি। KMRCL সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ১০টি জায়গা থেকে জল ঢোকা বন্ধ করা গেছে। বাকি ১টি থেকে জল ঢোকা বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে। সিমেন্টের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাটির বাঁধুনি শক্ত করা হচ্ছে।


সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, 'টিবিএমকে সরানো হয়েছে। এরপরের কাজ হল ফিক্সিং। সেই কংক্রিটের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তার জন্য মাটি বসে যায়। তার জন্য এটা হয়েছে। এর সঙ্গে বৃষ্টি হলে, বসে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ে।' সুড়ঙ্গে জল ঢোকা বন্ধ হলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে KMRCL সূত্রে দাবি করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: বাড়িতে ফাটল, আতঙ্কে ঘরছাড়া বাসিন্দাদের ঠাঁই স্থানীয় হোটেলই