আশাবুল হোসেন, সুকান্ত মজুমদার ও শিবাশিস মৌলিক: একটা-দুটো নয়, ইডি সূত্রে দাবি, অয়ন শীলের অফিস থেকে অন্তত ৬০টি পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি ও চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা উদ্ধার হয় (Municipal Recruitment Scam)। অফিসের ড্রয়ার থেকে উদ্ধার হয় ৪০০টি OMR শিট। এই প্রেক্ষাপটে, পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আজ ম্যারাথন অভিযান চালাল সিবিআই (CBI)।


অন্যায় করে লজ্জিত না হওয়া আরও এক অন্যায়। সক্রেটিসের এই উক্তি যুগের পর যুগ সত্য়। কিন্তু, মুশকিল হল, অন্য়ায় করে, পরে স্বীকারোক্তি, যে কোনও যুগেই সোনার পাথরবাটি। আর তাই অন্য়ায়ের অভিযোগ যখনই ওঠে, তখনই তার সত্য়তা খুঁজতে নামতে হয় সেই তদন্তকারী সংস্থাকে।

১৪টি পুরসভা, অয়ন শীলের অফিস-বাড়ি-ফ্ল্যাট, সল্টলেকে পুর-প্রশাসন ভবন, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অফিস- পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের সত্য়তা যাচাই করতে এবার একই দিনে কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় হানা দিল CBI. যদিও মু্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বয়াবহ দুর্ঘটনা, প্রাণহানি থেকে নজর ঘোরাতেই এই হানা।


আরও পড়ুন: Cow Smuggling Case: '৬ বছর চাকরি করেই ৩৬ লক্ষের গয়না!' ধৃত সায়গলের মামলায় বিস্মিত বিচারক


পুরসভায় নিয়োগেও যে দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছিল, সেই তথ্য প্রথম ফাঁস হয়, প্রোমোটার অয়ন শীলের অফিসে ইডির তল্লাশি অভিযানের পরে। কার্যত কেঁচো খুঁড়তে কেউটের মতো, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে হদিশ মেলে পুরসভাতেও নিয়োগ দুর্নীতির।


ইডি সূত্রে জানা যায়, অয়ন শীলের অফিস থেকে অন্তত ৬০টি পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি ও চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা উদ্ধার হয়। অফিসের ড্রয়ার থেকে উদ্ধার হয় ৪০০টি OMR শিট। যার মধ্যে অনেকগুলি OMR শিট ফাঁকা ছিল।


দুর্নীতির এই নেক্সাসে কেউকেটাদের সঙ্গে অয়নের যোগসূত্রের পক্ষে, ইডির চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিভিন্ন এজেন্টদের কাছ থেকে অন্তত ৪৫ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন শীল। অয়ন শীল জেরায় স্বীকার করেন, এই ৪৫ কোটির মধ্যে ১৮ কোটি টাকা তিনি নিজে রেখেছিলেন এবং কুন্তল ঘোষের নির্দেশে বাকি ২৬ কোটি টাকা তিনি দেন সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে।

ইতিমধ্য়েই পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এফআইআর দায়ের করেছে ইডি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০,১২০ বি, ৪৬৭ নম্বর ধারায় দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। পাশাপাশি, দুর্নীতিদমন আইনের ৭, ৮, ১২, ১৩ নম্বর ধারাতেও এফআইআর দায়ের করেছে ইডি। এছাড়াও, যোগ করা হয়েছে আর্থিক তছরুপের ধারা।