কলকাতা: দুর্নীতি কাণ্ডে পর পর গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল। সেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিতে। তার মধ্যেই তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল (Kunal Ghosh) ঘোষকে নিয়ে তুমুল জল্পনা শুরু হল। তৃণমূলের সঙ্গে এক অর্থে দূরত্ব বাড়ানোর পথে হাঁটছেন বলে শোনা যাচ্ছে। গত দু'দিনে তৃণমূলের কোনও বৈঠকে হাজির হননি কুণাল। তিনি কার্যত 'অন্তরাল'-এ রয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।


দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন কুণাল ঘোষ!


স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার পার্থকে নিয়ে একের পর মন্তব্য করে এর আগে দলের রোষে পড়েছিলেন কুণাল। তাঁকে 'সেন্সর' করেছিল তৃণমূল। পার্থকে নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মুখে লাগাম টানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাতে পার্থ সম্পর্কে মন্তব্য করা থেকে বিরত ছিলেন কুণাল। এ বার দলের সঙ্গেও তিনি দূরত্ব বাড়াচ্ছেন বলে জানা গেল। 


তৃণমূলের একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, আপাতত দলীয় পদ ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুণাল। গত দু'দিনে দলের কোনও বৈঠকে যোগ দেননি তিনি। একরকম 'অন্তরাল'-এ রয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সারাদিন ফোন বন্ধ করে রেখেছিলেন। মুখেও কুলুপ এঁটে রয়েছেন। পার্থ এবং অনুব্রতকে নিয়ে তাঁর মনোভাব নিয়েই দলের সঙ্গে সংঘাত বেঁধেছে বলে সূত্রের খবর। 


আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya: "কোনও অথরিটি আমার বিরুদ্ধে কোনও অর্ডার করেননি,'' প্রতিক্রিয়া মানিক ভট্টাচার্যর


আইকোর থেকে নিয়োগ দুর্নীতি, আগাগোড়া পার্থকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে কুণালকে। তার পরই তাঁকে 'সেন্সর' করে তৃণমূল। তার পর থেকে পার্থকে নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে চলেছেন তিনি। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতে গিয়ে বোরেলিন নিয়ে ঘোরেন বলেও জানিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, " আগাগোড়া বোরোলিন মেখে চলি। জীবনের ওঠাপড়া গায়ে লাগে না।" কিন্তু দলের সঙ্গে সংঘাতে কি নির্লিপ্ত থাকা হল না তাঁর, উঠছে প্রশ্ন। 


বিগত কয়েক দিনে দলের হয়ে যতবারই দেখা গিয়েছে কুণালকে, পার্থকে নিয়ে মন্তব্য করা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। বরং একের পর এক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল যখন বিদ্ধ, সেই সময় শারদীয়ার গান নিয়েই মেতে থাকতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি দুর্গাপুজোর গান রেকর্ড করেন তিনি। এর আগে গান লিখলেও, নিজের কণ্ঠে এই প্রথম গান ধরেন কুণাল। গানের বিষয়বস্তু ছিল মূল্যবৃদ্ধি। 'দাম কমিয়ে দে মা উমা' গানে মা দুর্গার কাছে মূল্যবৃদ্ধি কমানোর আর্জি জানাতে দেখা যায় তাঁকে। 


পার্থকে নিয়ে মন্তব্য করে আগেই তৃণমূলের রোষে পড়েন কুণাল


তবে বেশ কিছু দিন ধরেই কুণালকে নিয়ে ইন্ধনমূলক মন্তব্য করতে শোনা যাচ্ছিল রাজ্য বিজেপি-র নেতৃত্বকে। পার্থ সম্পর্কে কুণালই কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে তথ্য পৌঁছে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, "ইডি-সিবিআইকে তথ্য পৌঁছে দিয়েছেন কুণাল ঘোষই। উনি জেলে থাকাকালীন সমস্ত তথ্য যেখানে দেওয়ার দিয়ে দিয়েছেন। আরও অনেকে তৃণমূলে থেকে তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। পার্থর টাকা কোথায় আছে সেই তথ্যও পৌঁছে যাচ্ছে।" কুণাল যদিও সৌমিত্রর অভিযোগকে ধর্তব্যের মধ্যে আনতে চাননি।