কলকাতা: স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ (College) মানেই স্বাধীন জীবনের প্রথম স্বাদ। সেই স্বাদ চেটেপুটে উপভোগ করার পাশাপাশি কেরিয়ার গুছিয়ে নেওয়ারও সময় এটি। তবে এক্ষেত্রে কেরিয়ার মানে শুধু মন দিয়ে লেখাপড়া নয়, বাকিদের মধ্যে নিজেকে আলাদা করে চেনা ও চিনিয়ে দেওয়ার তোড়জোড়ও আজকাল কেরিয়ার তৈরির অন্যতম অংশ। চেনা পরিভাষায়, 'পার্সোনাল ব্র্যান্ড' (Personal Branding) তৈরির এই যে প্রক্রিয়া, তা কলেজ জীবন থেকেই শুরু করতে চান অনেক। কেন? ফয়দা রয়েছে। শুধু এক এক করে দেখে নেওয়া দরকার।   


ব্র্যান্ডিং কারে কয়...
শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে 'ব্র্যান্ড' কথাটি। জামাকাপড় থেকে খাবারদাবার, সব কিছুতেই এখন ব্র্যান্ডের রমরমা। কিন্তু এই ব্র্যান্ডের অর্থ কী? সোজা করে বললে, কোনও নাম, চিহ্ন, নকশা বা এমন কোনও জিনিস যা কোনও বিক্রেতাকে অন্যান্যদের থেকে স্বাতন্ত্র্য দেয়, সেটিই ব্র্যান্ড। এর মূল উদ্দেশ্য একটাই। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজের স্বতন্ত্র্য পরিচয় তৈরি করে নির্দিষ্ট গ্রাহক বা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করাই প্রধান লক্ষ্য। খাবার থেকে পোশাক-আশাক, বিপণন জগতে সর্বত্রই এই ব্র্য়ান্ডিং প্রক্রিয়ায় জোর দেওয়া হয়। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন শুধু 'প্রোডাক্ট'-র ব্র্যান্ডিং হয় না। ডিজিটাল পরিবর্তনের দুনিয়ায় এখন ব্যক্তিমানুষ, আলাদা করে নিজের ব্র্যান্ডিং করতে পারেন। এবং কেরিয়ার কনসালটেন্টদের একাংশের মতে, কলেজ-পড়াকালীন এই ব্র্যান্ডিং তৈরির উপযুক্ত সময়।


ফয়দা কী কী?

চাকরিক্ষেত্রে সুবিধা...

বহু সংস্থাই এখন স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মীদের বেছে নিতে চায়। সেক্ষেত্রে যদি কলেজের প্রথম বর্ষ থেকেই কোনও না কোনও ভাবে পড়ুয়ারা নিজের স্বাতন্ত্র্য তৈরি করে, নিজস্ব 'ব্র্যান্ড' তুলে ধরতে পারেন, তা হলে এই ধরনের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে।


কলেজ পাশের পরও সুবিধা...
ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের একটি সমীক্ষা বলছে, কলেজের লেখাপড়া শেষের পর চাকরি পেতে অন্তত ৩-৬ মাস সময় লেগে যায়। এ তো গেল মার্কিন মুলুকের কথা। আমাদের দেশে এই মেয়াদ অন্য রকম হওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা। কিন্তু কোনও পড়ুয়া যদি কলেজ থেকে নিজেকে 'ব্র্যান্ড' হিসেবে তুলে দেওয়ার দিকে নজর দেন, তা হলে কলেজের লেখাপড়া শেষের পরও চাকরি পেতে সুবিধা হবে তাঁর।


দক্ষতাবৃদ্ধি...
এই 'পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং' তৈরির প্রক্রিয়া কলেজ-পড়ুয়াকে নিজস্ব দক্ষতায় শান দিতে সাহায্য় করবে। সাধারণত কলেজ জীবন থেকেই কোনও ছাত্র বা ছাত্রী নিজেদের নানা দক্ষতা সম্পর্কে সচেতন হতে শুরু করেন।যদি একই সময় থেকে সেই দক্ষতায় শান দিয়ে নিজস্ব, স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করা যায়, তা হলে 'ব্র্যান্ডিং' ফলপ্রসূ হতে পারে।


স্নাতকের পর দিশাহারা লাগার আশঙ্কা কম...
বহু ক্ষেত্রে স্নাতক স্তরের লেখাপড়া শেষ হওয়ার পর ছাত্রছাত্রীরা বুঝতে পারেন না, কী ভাবে কাজ করবেন। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁদের বড় প্রশ্ন থাকে, কী ভাবে ইন্টারভিউ দেবেন। 'পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং'-এ নজর থাকলে এই দিশাহরা হওয়ার আশঙ্কাও কমে। কোনও এক বা একাধিক দিকে নিজের দক্ষতাবৃদ্ধিতে নজর দিলে আত্মবিশ্বাস চিড় খায় না। যে কোনও ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত থাকেন সকলে। 


 


আরও পড়ুন:মাকড়ের কামড় ! সময় থাকতে চিকিৎসা না হলেই প্রাণঘাতী হতে পারে স্ক্রাব টাইফাস