কলকাতা: দলের দীর্ঘদিনের কর্মী তিনি, নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়েও জোড়াফুল শিবিরেই রয়ে গিয়েছেন। সেই কুণাল ঘোষকেই (Kunal Ghosh) রাজ্য সম্পাদকের  পদ থেকে সরাল তৃণমূল। কুণালের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য দলের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেই এমন পদক্ষেপ, জানানো হয়েছে বিবৃতি জারি করে। কিন্তু কী অপরাধে তাঁকে সরানো হল, এখনও তা বুঝতে পারছেন না কুণাল। আর সেই আবহেই তৃণমূলে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন তিনি। (TMC Removes Kunal)


বুধবার দুপুরে বিবৃতি জারি করে দলের রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় কুণালকে। কুণালের দাবি, তিনি নিজেই, ঢের আগে ওই দু'টি পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তাই আলাদা করে সরানোর কী আছে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। দলের এই আচরণে যে আহত হয়েছেন, তা নিয়ে কোনও রাখঢাক করেননি কুণাল। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে তাঁকেও যে সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে, তা বুঝিয়ে দিলেন। 


দলীয় নেতৃত্বের বিবৃতিতে তিনি হতবাক বলে জানিয়েছেন কুণাল। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, "দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সব মহান, মহানুভব। ঈশ্বর মঙ্গল করুন ওঁদের। আমি তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলে আছি এবং থেকে যাওয়ার চেষ্টা করব। আমি দলবিরোধী কোনও কাজ করিনি। বাংলার তৃণমূল কর্মীরা জানেন, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মেয়ো রোডের পাশে যখন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে খুনের চেষ্টা করেছিল সিপিএম, সেই সময় এই কুণাল ঘোষ, গাড়িতে তাঁকে তুলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। এর পর যাবতীয় উত্থান-পতনের পরও, ২০২১ সালে যখন একের পর এক নেতা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, সেই সময় যারা তৃণমূলের হয়ে মাটি কামড়ে পড়েছিল, কুণাল ঘোষ তাদের মধ্যে একজন। এখন যদি দলের মনো হয় এই বিবৃতি আমার প্রাপ্য, সেটা তাদের ব্যাপার।"


আরও পড়ুন: Kunal Ghosh: ‘দেবের মিঠুনস্তুতি দোষ নয়, আমার বেলাতেই অগ্নিপরীক্ষা!’ অপসারিত হয়ে তৃণমূলকে প্রশ্ন কুণালের


কুণাল জানিয়েছেন, কালও জেলাস্তরে বৈঠক করেছেন তিনি। যেখানে যেখানে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনও রকম খামতি রাখেননি তিনি। কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিরোধীদের। আজ তাঁর পদ যাওয়ায় বিরোধীরাই সবচেয়ে খুশি, তাই কার মুখে লাগাম পরানো হচ্ছে, তা দল বুঝছে না বলেও মন্তব্য করেন কুণাল। নিজেকে তৃণমূলের সাধারণ কর্মী, সৈনিক হিসেবেও উল্লেখ করেন কুণাল। তবে দলে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে যে মন্তব্য করেছেন তিনি, সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আগামী দিনে কী সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।