বাচ্চু দাস, দার্জিলিং: রাতভর বৃষ্টির (Heavy Rain) জেরে সেবক-এর কাছে ১০ নং জাতীয় সড়কে (National Highway 10) নেমেছে ধস। যদিও শেষ অবধি পাওয়া খবরে, জানা গিয়েছে, ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় রাস্তা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে।


প্রসঙ্গত, গত মাসেও রাজ্যের পাহাড়ি রাস্তায় নেমেছিল ভূমিধস (Landslide at Birik Dara)।  প্রবল বর্ষণে (Heavy Rain) গত মাস থেকেই গোটা উত্তরবঙ্গে (North Bengal) পাহাড়ি রাস্তাগুলির হাল খারাপ। আর যার জেরেই নেমেছিল ভূমিধস। ভোগান্তির মুখোমুখি হয়েছিল ফের বিরিক দারা রোডের কাছে ১০ নং জাতীয় সড়ক (NH 10)। বিরিক দারা রোডের কাছে ১০ নং জাতীয় সড়কে ভূমিধস নেমেছিল। এদিকে এই অতিগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি মূলত সিকিম এবং কালিম্পংয়ের মাঝে লাইফলাইন হিসেবে কাজ করে। যার দরুণ রাস্তাটি ধসে যাওয়ার পর সেসময় একমুখী যানবাহন চলাচল করা শুরু করে। পরে অবশ্য দ্রত মেরামত করে নেওয়া হয়। 


উল্লেখ্য, বঙ্গে বর্ষা প্রবেশের পর দক্ষিণবঙ্গে সেভাবে দেখা না মিললেও, উত্তরবঙ্গে (North Bengal) প্রবল বর্ষণ কমবেশি হয়েই চলেছে। তার মধ্যে যে ৫ টি জেলায় আবহাওয়া দফতরের তরফে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে, সেগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি প্রবণতা রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, উত্তরবঙ্গে আগামী ২ দিন, বিশেষ করে ৫ টি জেলা আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি,  কোচবিহারে প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনা থাকবে। এর মধ্যে কয়েকটা জায়গায় অতি ভারী বৃষ্টিরও সম্ভাবনা থাকবে। আর সেই ৫ টি জেলার একটির মধ্যেই পড়ে এই এলাকা। আর এবার পূর্বাভাস মিলে গিয়ে রাতভর বৃষ্টি হয়েছে সেখানে। যার জেরে ফের ধস নেমে ফিরল বিপত্তি। 


অপরদিকে, বৃষ্টির তোড়ে ভাসছে তরাই-ডুয়ার্স। জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার- প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত নাস্তানাবুদ জেলাগুলি। গতকাল রাতভর রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়িতে। বিপুল বৃষ্টির কারণে জলস্ফীতি ঘটেছে তিস্তা, করলা এবং জলঢাকায়। বৃষ্টির তোড়ে জলে টইটুম্বুর জলপাইগুড়ি শহরের মধ্য়ে গিয়ে বয়ে চলা করলা নদী। গত চব্বিশ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি তে ১৩২.৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এই বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড।


এমন বৃষ্টির কারণে নদীর পাড়ের নিচু এলাকায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাহাড় সমতলে গত কয়েক দিন লাগাতার বৃষ্টির জেরে তিস্তা, জলঢাকা নদীতে লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দফতর। জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা করলা নদী এবার ও উদ্বেগ বাড়িয়েছে পরেশ মিত্র কলোনি, নীচু মাঠ এলাকার বাসিন্দাদের। সকাল থেকে ভারী বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় সমস্যায় বাসিন্দারা। নিকাশি ব্যবস্থা কিছুটা ভাল হলেও নিকাশি নালা সময় মতো পরিষ্কার না হওয়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।


আরও পড়ুন, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি প্রায় ৩৯ শতাংশ, অস্বস্তি থেকে মুক্তি কবে ? জানাল হাওয়া অফিস


বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে ১৩২.৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। তার ওপর তিস্তা ব্যারাজ থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে। যার জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড। আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে জলপাইগুড়িতে। করলার জল আরও বাড়লে শহরেও ঢুকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কায় বাসিন্দারা। অন্যদিকে তোর্সার জলে ভাসছে কোচবিহারের ফাঁসিঘাট, দিনহাটার গীতালদহ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তোড়ে ভেঙেছে রাস্তা, জল ঢুকেছে ঘরে। আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।