কলকাতা: সঙ্গীতের পিছনে ব্যয় করেছেন গোটা জীবন। গান গেয়েছেন একাধিক ভাষায়। অথচ এতকালেও সম্মান পাওয়ার যোগ্য মনে করা হয়নি তাঁকে। তাই প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukhopadhyay) নরেন্দ্র মোদি সরকারের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী’ (Padma Shri) প্রত্যাখ্যান করলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর।


মঙ্গলবার ‘পদ্মশ্রী’ প্রাপকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সন্ধ্যায় জানা যায়, মঙ্গলবার সকালেই শিল্পীর লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে ফোন আসে দিল্লির তরফে। ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে তাঁকে সম্মানিত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। কিন্তু অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে শিল্পী সরাসরি জানিয়ে দেন যে, তিনি ‘পদ্মশ্রী’ প্রত্যাখ্যান করছেন। এই সম্মান নিতে অপারগ তিনি। 


শিল্পীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বয়স ৯০ পেরিয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের। ১২ বছর বয়স থেকে গান গাইছেন। সঙ্গীতের পিছনে জীবনের ৭৫টি বছর উৎসর্গ করে দিয়েছেন। অথচ এতদিনেও তাঁর মতো সঙ্গীতজ্ঞকে সম্মানের যোগ্য বলে মনে হয়নি। বরং তাঁর চেয়ে কম বয়সের শিল্পীদের সম্মান ধরানো হয়েছে। তাতেই সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছেন শিল্পী।


সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কন্যা সৌমী সেনগুপ্তর সঙ্গ ফোনে যোগাযোগ করে এবিপি আনন্দ। কোনও রাখঢাক না করেই তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র থেকে ফোন করে জানানো হল ‘পদ্মশ্রী’ দেওয়া হবে। বাংলায় যাঁরা গান-বাজনার সাধনা করেন, তাঁদের মধ্যে প্রবীণতম উনি। ১২ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন। ৭৫ বছর ধরে সঙ্গীতসাধনা করছেন। নবতিপর শিল্পীকে এখন ‘পদ্মশ্রী’ দেওয়াটা অপমান ছাড়া কিছুই নয়। অল্প বয়সিদের তা দেওয়া যায়।’’


আরও পড়ুন: Kakababur Protyaborton: 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'-এর জন্য 'বুম্বা'-কে শুভকামনা অমিতাভের, ট্যুইট করলেন ট্রেলার


তাঁদের দাবি, নামের তালিকা প্রকাশ করে দেওয়ার পর দায়সারা ভাবে ফোন করে জানানো হয়। তাই সম্মান প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নেন শিল্পী। বেশ কিছু দিন ধরেই শরীর ভাল যাচ্ছে না সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ফোন এলে পরিবারের লোকজনই তাঁকে ফোন ধরান। কিন্তু সম্মান নিতে অপারগ বলে সরাসরি জানিয়ে দেন তিনি। 


বাংলা সঙ্গীতজগতের উল্লেখযোগ্য নাম সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর জুটি বহু বছর বাঙালির মন জুড়ে ছিল। একসময় মহানায়িকা সুচিত্র সেনের কণ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাবড় সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ২০১১ সালে তাঁকে ‘বঙ্গ বিভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ১৯৭০ সালে ‘নিশিপদ্ম’ এবং ‘জয় জয়ন্তী’ ছবিতে গানের জন্য জাতীয় পুরস্কারও পান।