মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: কয়লা মাফিয়া (Coal Mafia Murder Case) শেখ আমিন ও আরও এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় ৮ অপরাধীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড (Lifetime Imprisonment) দিলেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক (durgapur court)। নিহত দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম শেখ মুজাহার। দুজনকে হত্যার ঘটনায় গত কাল যাবজ্জীবন সশ্রম কারাবাস হয়েছে ৮ বন্দির।


কী জানা গেল?
শেখ সানিউল ওরফে সানাই, শেখ শাকিবুল, শেখ কাশেম, শেখ নুরুল হোদা, শেখ জাহাঙ্গির, শেখ জনিয়ুল, বাবর আলি এবং শেখ শাহজাহান-- এই আট জন ওই হত্যাকাণ্ডে দোষী প্রমাণিত হয় মঙ্গলবার। বুধবার তাদের ফের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৮ জনেরই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। যে ঘটনায় এই শাস্তি ঘোষণা হয়েছে, সেটি ২০১৬ সালের। লাউদোহা থানা এলাকায় কয়লা কারবার নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছিল। সেই বছরই ইদের সময় গুলি করে হত্যা করা হয় শেখ আমিনকে। পরে তদন্তের ভিত্তিতে দুর্গাপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকে তারা বিচারাধীন অবস্থায় ছিল। মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত হয় আটজনই। বুধবার ছিল সাজা ঘোষণা। আদালত চত্বরে এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয়।  সরকারি আইনজীবীকে ঘিরে ধরেও বিক্ষোভ শুরু করে দেন আসামিদের পরিবার-পরিজনেরা। গোটা পরিস্থিতি ঘিরে আদালত চত্বরে সাময়িক কিছু ক্ষণ উত্তেজনা শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি সামাল দেয় দুর্গাপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং কমব্যাট ফোর্স।


গৃহবধূ হত্যায় যাবজ্জীবন...
বছরদুয়েক আগে এক গৃহবধূকে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয় মালদা জেলা আদালত। মৃত মহিলার স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেন মালদা জেলা আদালতের অ্যাডিশনাল ফাস্ট কোটের বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়। দোষীদের শাস্তি হওয়ায় খুশি মৃত মহিলার বাপের বাড়ির লোকেরা। ২০১২ সালের ৪ মার্চ কালিয়াচক থানার চোরিঅনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজিবুল শেখ তার স্ত্রী ঝর্ণা বিবিকে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ও আগুন ধরাতে সাহায্য করে বাবা ভোগ্গু শেখ, মা জোনাকি বিবি ও দুই বোন আসমানি বিবি ও আসিয়া বিবি। ঝর্ণা বিবি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ছটপট করতে থাকলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হতে থাকায় মালদা মেডিক্যালের চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতা রেফার করে দেন। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই মৃত ঝর্ণা বিবির বাবা মোতায়ের শেখ অভিযুক্ত জামাই সহ তার পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। শুরু হয় ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া। অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে 498A,304B,302 ও 34 ধারাই মামলা রুজু করা হয়। প্রায় নয় বছর ধরে চলে ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া। ১৬ জনের সাক্ষী গ্রহণ করা হয় এই মামলায়। তার পরই যাবজ্জীবনের ঘোষণা।


আরও পড়ুন:মোদি পদবী নিয়ে কটাক্ষ, মানহানি মামলায় দোষী, সাময়িক জামিন পেলেন রাহুল