সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: মুষলধারে বৃষ্টি, সঙ্গে তীব্র বজ্রপাত (Thunder Death)। তাতেই প্রাণ গেল ২ জনের। গত কাল অর্থাৎ শনিবার পুরুলিয়ার (Purulia News) মফঃস্বল থানার পলাশকলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতদের নাম অরূপ মুদি এবং তারক মাঝি। 


কী ভাবে মৃত্যু? 
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কাল বিকেলে মফঃস্বল থানার পলাশকলা গ্রামের বাসিন্দা, চব্বিশ বছরের অরূপ পুকুরে গিয়েছিলেন। সেই উপরই তাঁর উপর বজ্রপাত হয়। পলকের মধ্যে সংজ্ঞা হারান তিনি। শুধু তাই নয়। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দীর্ঘক্ষণ সেখানেই পড়েছিলেন অরূপ। পরে পরিবারের লোকজন যুবককে উদ্ধার করে  পুরুলিয়া গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। ততক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তখনই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্য দিকে, একই দিনে, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ  মফঃস্বল থানার ছররা গ্রামের বাসিন্দা তারক মাঝি চাষের জমিতে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য মাঠে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময়ই বিপত্তি। অরূপের মতোই তাঁর উপর বজ্রপাতের ঘটনা ঘটার পর দীর্ঘ ঘণ্টাচারেক ওভাবে পড়েছিলেন তারক। পরে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে মাঠ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করেন। হাসপাতালেও নিয়ে আসা হয়েছিল তারককে। কিন্তু চিকিৎসার কোনও সময়ই ছিল না। হাসপাতালে আনার পর পরই চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর আজই ২ জনের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গত কয়েক বছর ধরেই বর্ষার সময় রাজ্যের নানা প্রান্তে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা প্রায়শই শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে গত এপ্রিলে পূর্ব বর্ধমানের পরিসংখ্যানটি মনে পড়ে গিয়েছে অনেকের।

সে মাসে তুমুল বৃষ্টিপাতের জেরে একদিনে দুপুর থেকে গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪। বজ্রপাতে আহত হয়েছিলেন ১ জন। ঘটনার দিন ভাতারের বেলেণ্ডা গ্রামে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় মনসুর আলি শেখের (৩৫)। মৃতের বাবা আসগর আলির কথায়, ছেলেকে নিয়ে মাঠ থেকে ফিরছিলেন তিনি। কিছুটা আসার পরই বজ্রাঘাত টের পান। কিছুটা এগোতেতেই দেখেন পেছনে আসতে গিয়ে উলটে পড়ে গিয়েছেন মনসুর। মৃতের বাবা আরও জানান, শুক্রবার বেঙ্গালুরু চলে যাওয়ার কথা ছিল মনসুরের। তাই তড়িঘড়ি ধান কেটে ঘরে ঢুকিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। জানা গিয়েছে, ২ বিঘে চাষ করেছিলেন মনসুর। ১ বিঘের মত ধান কেটে ঘরে ঢোকাতে পেরেছিলেন। তারই মাঝে এই ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি মনসুরের পরিবার। অন্যদিকে,কালনা মহকুমাতেও বজ্রাঘাতে মারা যান খোকন শেখ নামে এক যুবক। একই দিনে বজ্রাহত হয়ে প্রাণ যায় খণ্ডঘোষের তোরকোনার বাসিন্দা রাসুদেব রায়ের (৫২)। সে দিনই বজ্রাঘাতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন বর্ধমান থানার নতুনগ্রামের বাসিন্দা মফুজা বেগম (৩৫)।  আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনেই আবার মঙ্গলকোটের জাঁহাপুর গ্রামের বাসিন্দা আপাল লোহারের (৪১) মৃত্যু হয় বলে শোনা যায়।


আরও পড়ুন:টিভিতে ডার্বি দেখেছি, এবার ভরা গ্যালারির সামনে ডার্বিতে গোল করলাম: নন্দকুমার