মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election Result 2024) মিটতেই, ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ বাংলার জেলায় জেলায়। এবার  ভোট পরবর্তী হিংসায় (Post Poll Violence)  উত্তপ্ত পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর। এবার ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বিজেপির দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 


BJP-র দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ


শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ভাঙচুর করা হয় টালির ছাদ উড়িয়ে দেওয়া হয় বিজেপির দলীয় পতাকাও। রবিবার সকালে এই ঘটনা সামনে আসতেই, ফেটে পড়ে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা।


'বিজেপির দলীয় কার্যালয় জ্বালিয়ে মানুষের মনোবল ভাঙতে চাইছে'


বর্ধমান দুর্গাপুর বিজেপির জেলা সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, 'লোকসভায় জায়গা না পেলেও দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভায় এবং পূর্ব বিধানসভার একাধিক ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তাই বিজেপি কর্মীদের মনোবল ভাঙতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বিজেপির দলীয় কার্যালয় জ্বালিয়ে মানুষের মনোবল ভাঙতে চাইছে।' কিন্তু সামনেই পুরসভা নির্বাচন বিজেপি জয়লাভ করবেই বলেও আশাবাদী তিনি।


'নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বকে চাপা দিতে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে'


যদিও এ বিষয়ে দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসক মন্ডলী সদস্য ও তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা কোর কমিটির সদস্য দীপঙ্কর লাহা বলেন, 'বিজেপি বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভায় বিপুল ভোটে হেরেছে।  আর নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বকে চাপা দিতে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। ওরা নিজেরাই হয়তো এই কাণ্ড করেছে তৃণমূলের কেউই ঘটনায় জড়িত নয়।'


ভোট শেষ, হিংসার শেষ নেই


ভোট শেষ, হিংসার শেষ নেই।  ৪ তারিখ ভোটের ফল বেরোনোর পরও রাজ্য়ের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে অশান্তি। বর্ধমান শহরের  ২০ নম্বর ওয়ার্ডের, মিঠাপুকুর মোড়ে শুক্রবার রাতে, বিজেপির বুথ এজেন্ট, বিশ্বনাথ মোদকের দোকানে হামলা চালানো হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মুখ ঢেকে কয়েকজন দুষ্কৃতী দোকানে ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছে। পাশাপাশি  ডায়মন্ড হারবার লোকসভার আমতলায় বিজপির দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন একাধিক বিজেপি কর্মী। ডায়মন্ড হারবারের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী   অভিজিৎ দাস বলেন, তৃণমূল ভয় দেখিয়ে এসব করছে। আমাদের কর্মীরা এখানে রয়েছেন ভয়ে। মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম বলেছেন,'এটা একটা ফোবিয়া। আমাকে মারবে, এই ভেবে আমি পালিয়ে যাচ্ছি। দলে গুরুত্ব পেতে এরকম করেন অনেক নেতাকর্মীরা। একটা ছেলে সাত লাখের বেশি ভোটে জিতেছে সে কেন মারতে যাবে।'


আরও পড়ুন, আগে TMC করতেন..', ভোটে দিলীপের কেন্দ্রে BJP-র এজেন্ট হওয়ার কি মাশুল গুণতে হল ?


 'রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করছে'


শুক্রবার গোঘাট বিধানসভার ভুরকুণ্ডা এলাকায় বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দু-পক্ষকে ঠেকাতে গিয়ে আহত হন একজন পুলিশ আধিকারিক। শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত বিজেপি কর্মীকে ভর্তি করা হয় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। ঘটনায় তৃণমূল যোগ অস্বীকার করেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার, অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে ভক্তিনগর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি কর্মীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, 'ভোট পরবর্তী যেসব হিংসার খবর আসছে তার মধ্য়ে সিংহ ভাগই বিজেপির নিজেদের মধ্য়ে দ্বন্দ্ব। রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করছে।' 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।