কমলকৃষ্ণ দে, জয়ন্ত পাল, মুন্না আগরওয়াল, কলকাতা : 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে তো আমি লড়াই করেছি, আর কে পশ্চিমবঙ্গে লড়াই করেছে?' লোকসভা ভোটের মুখে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ। মন্তব্য করার ব্যাপারে তিনি সদাই চাঁচাছোলা। বিরোধীদের বিরুদ্ধে সর্বাদা অল আউট অ্যাটাকই করেন দিলীপ। এবারও পেয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সতর্কতা। পার্টিও সতর্ক করেছে তাঁকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দিলীপ ঘোষ রয়েছেন নিজের মেজাজেই। তবে এবার দিলীপ ঘোষের একটি মন্তব্যে অভিমানের আভাস পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মঙ্গলবার দিলীপ বলেন, 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে তো আমি লড়াই করেছি, আর কে পশ্চিমবঙ্গে লড়াই করেছে?' এই কথার মধ্যে  অভিমানের ছাপ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। 


দল লোকসভা আসন পাল্টে দেওয়ায় কি তাহলে এখনও অভিমানী দিলীপ? সেটাই কি বুঝিয়ে দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী? ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে চোখে পড়ার মতো ফল করেছিল বিজেপি। ২ থেকে একলাফে তাদের আসন বেড়ে হয়েছিল ১৮। প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। তখন, রাজ্য বিজেপির সভাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। এরপর ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে  ২০০ আসনের টার্গেট
করে ৭৭-এ থেমে যায় বিজেপি। এরপর, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে, হোমগ্রাউন্ড মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে, বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে টিকিট দেওয়া হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। এই প্রেক্ষাপটে এবার দিলীপ ঘোষের গলায় শোনা গেল ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য । 


আর এই প্রসঙ্গে কী বলছেন বিজেপিতে এখন গুরুদায়িত্বে থাকা সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা ? দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির মন্তব্যে কি তারা অস্বস্তিতে ? শুভেন্দু অধিকারী বলললেন, দিলীপ ঘোষ দলের সিনিয়র লিডার, তাই তিনি এই নিয়ে মন্তব্য করতেই চান না। আর লড়াইটা 'পিসি-ভাইপো'র বিরুদ্ধে । শুভেন্দুর কথায় , 'আমাদের সিনিয়র লিডার, তাঁর কথার উত্তর আমাকে ওই ভাবে দিতে হবে কেন? সবাই মোদি বাহিনীর সেনা...' 


আবার দলে দিলীপের পরবর্তী রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মত, ' যখন উনি রাজ্য সভাপতি ছিলেন, তখন তো বিজেপিতে পুরোনোরা নেতা ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে উনি মুখ ছিলেন। তখন উনি তো লড়াই করেছেন। তখন প্রচুর লোক সিপিএম থেকে আমাদের পার্টিতে এসেছিল। এটা তো ফ্যাক্ট। এটা তো অস্বীকার করার জায়গা নেই। এখনও তাঁরা পার্টিতেই আছে। এখন সবাই মিলে আমরা লড়াই করছি।' 


মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষ বলেন, ' যাঁদের দেখছেন, এঁরা কেউ বিজেপি ছিল না। আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মীরা মার খেয়ে দুর্নীতি দেখে বিজেপির ঝান্ডার তলায় এসেছে। ' এখন দেখার দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুরা ঘাসফুল শিবিরকে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে কি না।  


আরও পড়ুন :


আজ শীতলা অষ্টমী, কতক্ষণ পুজো দেওয়া যাবে? কেন বাসি খাবারই খেতে হন আজ? জানুন ব্রতকথা