কলকাতা : আজ শীতলা অষ্টমী। বাংলার বহু জায়গায় সন্তানের মঙ্গলকামনায়  চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টম দিনে পালন করা হয় এই ব্রত। মঙ্গলবার সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে মা শীতলার পুজো চলছে। সোমবার রাত ৯ টা ০৯ থেকেই তিথি শুরু হয়েছে। তিথি স্থায়ী হচ্ছে মঙ্গলবার রাত ৮ টা ৮ পর্যন্ত। তবে পুজো দেওয়ার ভাল সময় সন্ধে সাড়ে ৬ টা অবধি। মানুষের বিশ্বাস, মা শীতলার পুজো করলে গুটিবসন্ত, হাম-পক্স, ইত্যাদি রোগ বালাই হয় না। আবহাওয়ার পরিবর্তনের এই সময়ে তো নানারকম রোগের আক্রমণ হয়। সেই আশঙ্কা থেকে রেহাই পাওয়ার কামনাতেই হয় মা শীতলার পুজো। 


যাঁরা শীতলা পুজো করেন বা মা-শীতলার উপর আস্থা রাখেন, তাঁরা জেনে রাখুন, কেন এই দিন পুজো করা হয় লোকদেবী শীতলাকে । প্রত্যেক পুজোরই কিছু ব্রতকথা থাকে। 


শীতলা অষ্টমীর দিনে এক বৃদ্ধা ও তাঁর পুত্রবধূরা শীতলা দেবীর পুজো করবেন বলে ঠিক করেন। অষ্টমীর দিন টাটকা খাবার খাওয়া যাবে না, ব্রতপালনের নিয়ম। তাই তাঁরা রেঁধে রাখলেন সপ্তমীতেই। ছেলের বউদের একটি করে ছেলে। তারা  বাসি খাবার খেতে ও বাচ্চাদের খাওয়াতে দ্বিধা বোধ করছিল । তাই চুপিচুপি  নিজেদের জন্য টাটকা খাবার তৈরি করল আর শাশুড়ির জন্য রাখল বাসি খাবারই।  এরপর যখন ছেলের বউরা যখন ছেলেদের খাওয়াতে গেল, তখন দেখল তাদের মৃত্যু হয়েছে। তখন তারা বুঝল , মা শীতলার কোপেই এই ঘটনা। শাশুড়ি তো সব শুনে বউদের গ্রাম থেকে তা়ড়িয়ে দিল।   মৃত সন্তানকে নিয়ে দুজনেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। এরপর পথে পথে ঘুরে এক বনে পৌঁছল তারা। দেখল একটি গাছের তলায় দুই মহিলা বসে। তাদের নাম আসলে ওরী ও শীতলা। তারা দুই বোনের পরিচয় জানত না। কিন্তু দেখল দুই বোন মাথআর উকুন নিয়ে বড় কষ্ট পাচ্ছে। দুই বউ মিলে তাদের মাথার সব উকুন বেছে দিল। তখন ওরী ও শীতলা বলল, তাদের মাথা ঠান্ডা হয়েছে। এভাবেই যেন তাদের পেটের শান্তি হয়। তখন নিজেদের দুঃখের কথা বলল তারা। তখন দেবী  শীতলা নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁদের ভর্ৎসনা করলেন। তখন দুই বউ ক্ষমা চেয়ে নিল। এরপর থেকেই তারা নিয়ম মেনে ব্রত পালন করতে লাগল। আর শীতলা অষ্টমীতে অরন্ধন প্রথা আরও প্রচার পেল। 


মনে করা হয় মা শীতলার পুজো করলে গুটিবসন্ত, হাম-পক্স, ইত্যাদি রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।  এছাড়া জীবনের নানা সঙ্কট ও  কষ্ট থেকে মুক্তি দেন মা-শীতলা। মা শীতলার হাতে থাকে ঝাড়ু, যা গৃহস্থর ঘর থেকে অশুভ যা কিছু দূর করে। দারিদ্রের চিহ্ন সরিয়ে নিয়ে আসে সমৃদ্ধি। আজ সন্ধে সাড়ে ৬ টা অবধি পুজো দিতে পারবেন ভক্তরা। অর্থাৎ ১২ ঘণ্টার মতো সময় পাওয়া যাচ্ছে পুজো ও অঞ্জলির জন্য । 


ডিসক্লেমার :  এখানে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে bengali.abplive.com-এর সম্পাদকীয় স্তরে এ ব্যাপারে কোনও মতামত নেই এবং অনুসরণের জন্য এবিপি নেটওয়ার্ক পরামর্শও দেয় না। কোনো তথ্য বা বিশ্বাস বাস্তবায়নের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই নিন।