কলকাতা: চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। SSKM বয়কটের ডাক তুলেছিলেন। তাতে FIR দায়ের করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কামারহাটির তৃণমূল বিধয়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) জানালেন, জন্মলগ্ন থেকেই 'কেস' খাওয়া লেখা হয়ে যায় কারও কারও ভাগ্যে। তিনিও আজীবন 'কেস' খেয়েই আসছেন। কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি থেকে তৃণমূল আমলেও 'কেস' খেলেন।


SSKM হাসপাতালের রোগী পরিষেবা নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মদন। সিপিএম আমলের সঙ্গে তুলনা টানলে, অস্বস্তিতে পড়ে তাঁর দল তৃণমূল। দলে তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সেই আবহে SSKM কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধ এফআইআর দায়ের করেন। তা নিয়ে যদিও ভাবিত নন বলে জানান মদন। তবে কটাক্ষও উঠে আসে তাঁর কথায়। 


এ দিন মোডিক্যাল কলেজে এক রোগীকে দেখতে যান মদন। সেখানেই SSKM-এর দায়ের করা এফআইআর নিয়ে মুখ খোলেন। মদন বলেন, "জন্মলগ্ন থেকেই কেস খাওয়া লেখা থাকে কারও কারও। কেস খাওয়া আমার কপালে লেখা রয়েছে। 'কণ্ঠে আমার কাঁটার মালা, ফুলে মালা নয়, দুঃখ যাহার মাথার মুকুট, ঝড়কে কী তার ভয়'!"


আরও পড়ুন: Madan Mitra: ‘দিনভর অভিষেককে রগড়েছে CBI, সেই অবস্থাতেও মমতা মানবিক, তাই সঙ্গে আছি’, বললেন মদন


তবে এই 'কেস' খেয়ে তিনি লজ্জিত নন বলে জানান মদন। তাঁর কথায়, "সোনাপাচার, গরুপাচার বা কয়লাপাচারে কেস খাইনি। রোগীর চিকিৎসার জন্য কেস খেয়েছি। যিনি ভাল মনে করেছেন, কেস করেছেন। ক্ষমতা আছেন তাই করেছেন। ছাত্র পরিষদ করার সময় সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলে কেস খেয়েছি, সিপিএম-এর আমলে কেস খেয়েছি, তৃণমূলের সময়ও কেস খেলাম। কোনও গুপ্ত জায়গায় হানা দিয়ে কিছু হবে না। বুক ফুলিয়ে কামারহাটিতে ঢুকব।"


মদনের এই মন্তব্য নিয়ে সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "মদন মিত্রকে সকলে চেনেন। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতা। বিধায়ক হিসেবে মানুষের পাশে থাকেন। এটা ওঁর স্টাইল। সোনা, গরু, কয়লাপাচারে নাম আসেনি যদিও। কিন্তু গন্ডগোল হচ্ছে যে, তৃণমূল দলটাই চুরি, লুঠের দল। পুরনোদের মধ্যে অভিমান ধরা পড়ছে। আশঙ্কা করছেন, পরিবারের উপর চাপসৃষ্টি হবে। মদনের সঙ্গে এমন হলে সাধারণ মানুষের কী হবে? খুবই দুর্ভাগ্যজনক চেহারা রাজ্যের।"


বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার কথায়, "SSKM হাসপাতালের যে হতদরিদ্র অবস্থা, রোগীরা যে ভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন, মদন মিত্র তা তুলে ধরেছেন সন্দেহ নেই। সরকার খোঁজ নিক, ত্রুটিগুলি শুধরে নিতে চেষ্টা করুক। কিন্তু এই সরকারের সেই মানসিকতা নেই। আর এফআইআর বড় কথা নয়। তৃণমূলের উপর থেকে নীচে পর্যন্ত সব চোর। কেস খেলেও লজ্জা নেই এঁদের। গা সওয়া ব্যাপার হয়ে গিয়েছে।" তবে মদনের কথায় নতুন করে বিতর্কের কোনও কারণ নেই বলে মত তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর যুক্তি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মদন। এর পর আর নতুন করে বিতর্ক অযথা।