কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে একটি চিঠির ভিত্তিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব। তার পর প্রায় সাড়ে ন'ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ। সকাল থেকে সেই নিয়েই উত্তাল ছিল বঙ্গ রাজনীতি। আর সেই আবহেই বঙ্গ রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন কামারহাটির তৃণমূল (TMC) বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। SSKM হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন, তাতে অস্বস্তিতে পড়ে তাঁর নিজের দল তৃণমূলই। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন মদন, তা পেয়ে দলনেত্রীর ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল মদনের মুখে।


মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত, সরকারি হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান শুভদীপ পালকে SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। রোগীকে ভর্তি করা হয়নি বলে অভিযোগ। চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে দীর্ঘ ছ'ঘণ্টা রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে রেখে দিতে হয়, এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে বলেও সুরাহা হয়নি বলে দাবি করেন মদন। সরাসরি হস্তক্ষেপ দাবি করেন মমতার। 


তার পর শনিবার রাতেই রোগীর পরিবারে সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা। তাদের হাত থেকে কাগজপত্র নেন। সেই মতো ফোন যায়। তার পর মেডিক্যাল কলেজে ওই রোগীকে ভর্তি করার ব্যবস্থা করা হয়। মমতার এমন দরদী মনোভাবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন মদন। রবিবার তার জন্য মমতাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। 


আরও পড়ুন: Madan Mitra: আমি গুন্ডামি করতে যাইনি, নিজের কাউকে এসি রুমে ঢোকাতে যাইনি, SSKM-এর FIR নিয়ে প্রতিক্রিয়া মদনের


CBI যখন অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, সেই সময় মমতার মনের অবস্থা কী ছিল, তা তিনি ভালই জানেন বলে জানান মদন। তার পরেও যে মমতা সময় বের করে নিজে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন, তাতেই খুশি তিনি। এ দিন মদন বলেন, "কাল সাড়ে ন'ঘণ্টা ধরে অভিষেককে যে ভাবে রগড়েছে। কিছুই নয়, সময় নষ্ট করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কী মানসিক অবস্থা ছিল জানি। তার মধ্যেও রোগীকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার ব্য়বস্থা করে দিয়েছেন। এ থেকেই বোঝা যায়, তিনি কতটা মানবিক।"


বেশ কিছু দিন ধরেই তৃণমূলে থেকেও, মাঝে মধ্যেই বেসুরো হতে শোনা গিয়েছে মদনকে। দলের একাধিক সিদ্ধান্ত থেকে দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও মুখ খুলতে দ্বিধা করেননি। SSKM পর্বের পর তৃণমূলে তাঁর জায়গা টলমলে হয়ে যেতে পারে বলেও শোনা যেতে শুরু করে। প্রকাশ্যে সিপিএম-এর প্রশংসা করা মদন অন্য চিন্তাভাবনা করছেন বলেও শুরু হয় গুঞ্জন। কিন্তু মমতার হস্তক্ষেপের পর মদনের বক্তব্য, "রোগীর পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে যায়, কাগজপত্র জমা দেয়। তার পর ফোন গিয়েছে। রোগীকে ভর্তি করার ব্যবস্থা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। এটাই আমাদের মুখ, এটাই মমতা সরকারের মুখ। এই জন্যই সঙ্গে আছি।"


CBI জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া অফিষেকেরও প্রশংসা করেন মদন। তাঁর কথায়, "অভিষেক যে বলেছে, 'দিল্লির কুকুর নয়, বাংলার বাঘের বাচ্চা হতে চাই,' সর্বান্তকরণে এর সমর্থন করছি।" দলে নিজের অবস্থান নিয়েও বেশি ভাবিত নন মদন। তাঁর সাফ কথা, তৃণমূল মনোনীত করল বা না করল, আগামী কাল ভোট হলেও, কামারহাটিতে তিনিই জিতবেন।