কলকাতা: প্রথমে নিখোঁজ বলে হইহই রইরই পড়ে গেল। তার পর জানা গেল দিল্লিতে তিনি। মুকুল রায়কে (Mukul Roy) নিয়ে টানাপোড়েনে এ বার মুখ খুললেন কামারহাটির তৃণমূল (TMC) বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে তাঁর বক্তব্য, "মুকুলকে নেওয়ার সময় মনে হচ্ছিল, দিল্লিতে বিজেপি-র (BJP) সিংহাসন দখল হয়েছে। গতবছর একুশে জুলাই মমতা-অভিষেকের পাশেই মুকুলের চেয়ার ছিল। বিজেপি-তে চলে গিয়ে সব খবর দিয়ে, তারপর পাগল সেজে এলে মঞ্চে জায়গা হয়ে যাবে? কেউ আসছে, যাচ্ছে, দলটা রেস্তরাঁ হয়ে গিয়েছে। সবাই তো এবার মুকুলের পথে হাঁটবে!"


মুকুলকে কেনই বা আনা হল, কেনই বা এত মুকুল মুকুল হচ্ছে, প্রশ্ন মদনের


মুকুলের 'অন্তর্ধানে'র নেপথ্য়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত থাকতে পারে বলেও জল্পনা উস্কে দিয়েছেন মদন। তাঁর কথায়, "এটা শুভেন্দু অধিকারীর গেমপ্ল্যান। মুকুলকে দিয়ে কিছু নাম বলানো হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করেন। সেই জন্যই মুকুল রায়কে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।" তবে গোটা ঘটনাক্রমের জন্য দলের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মদন। মুকুলকে কেনই বা আনা হল, কেনই বা এত মুকুল মুকুল হচ্ছে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই মন্তব্যের জন্য দলের তরফে শোকজ করা হলেও, তিনি তৈরি বলে জানিয়ে দিলেন মদন।


আরও পড়ুন: Mukul Roy: সজ্ঞানেই দিল্লি গিয়েছেন, দাবি মুকুলের, বললেন, ‘CPM-কে হটানোই লক্ষ্য’


মুকুলকে নিয়ে এ দিন প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য ছিল, "মুকুল রায় কোথায় যাবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার। মুকুল রায় বিজেপি-র বিধায়ক। তাঁর ছেলে যে অভিযোগ করছেন, পুলিশ তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে। হতেই পারে যে ভয় দেখানো হয়েছে।" তৃণমূলের তরফে সাংসদ শান্তনু সেনও জানিয়েছেন, তৃণমূল বঙ্গ রাজনীতিতে এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, কোন মুকুল গাছে ধরল, কোনটা ঝরে গেল, তাতে কিছু যায় আসে না দলের। কিন্তু যে ভাবে মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বিজেপি-র টিকিটে জেতা মুকুলের হাতে জোড়াফুল পতাকা তুলে দিয়ে দলে স্বাগত জানানো হয়েছিল, তা নিয়ে মদনের মতো অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মুকুলকে নিয়ে তপ্ত বাংলার রাজনীতি


মুকুলের শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতা নিয়েও যদিও প্রশ্ন রয়েছে। মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায় খোদ জানিয়েছেন, মুকুল মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। গত তিন-চার বছরের ঘটনাবলী মুকুলের স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিগত তিন দিন ধরে মুকুল ইনস্যুলিন নেননি, ওষুধ খাননি, আচমকা গায়েব হয়ে গিয়েছেন বলেও দাবি করেন। শুধু তাই নয়, বাবার দিল্লিযাত্রায় দলের অন্দরে তাঁকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। তিনি জানিয়েছেন, মমতাকে দেখে তৃণমূল করেন তিনি। তাঁকে যেন ফের বিজেপি-র দিকে ঠেলে না দেওয়া হয়।