কলকাতা: সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার পর লোকসভা নির্বাচনও রয়েছে। তার আছগে জাতীয় দলের মর্যাদা হারিয়েছে দল। সেই আবহে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানালেন, জাতীয় দলের মর্যাদা চলে যাওয়া নিয়ে অমিত শাহকে (Amit Shah)তৃণমূলের তরফে ফোন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। কিন্তু বিরোধী দলনেতার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রমাণ করতে পারলে ইস্তফা দেবেন বলেও জানালেন। অন্যথায় মিথ্যা দাবি করছেন যাঁরা, তাঁরা নাকখত দেবেন কিনা, এই প্রশ্নও তোলেন মমতা (National Party Status)।


শুভেন্দুকে খোলা চ্যালেঞ্জ  মমতার


মঙ্গলবার হুগলির সিঙ্গুরে সভা করেন শুভেন্দু। সেখান থেকেই বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি। বলেন, "জাতীয় তকমা ফেরানোর জন্য চার বার ফোন করে অনুরোধ করেছিলেন মমতা, প্রত্যাখ্যান করেছেন অমিত শাহ"। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে তার জবাব দিলেন মমতা। এ দিন তিনি বলেন, "গতকাল অত্য়াশ্চর্জনক ভাবে কিছু মিথ্যাচার, কুুৎসিত, দুর্বিকার, ধ্বংসাত্মক কথাবার্তা বিজেপি-র একটি মিটিং থেকে শুনছিলাম। আপনারা সবাই টিভিতে দেখাচ্ছিলেন। দেখালেম, বদনাম করলেন আমার। কিন্তু একবারও আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন! আমার অফিসকে জিজ্ঞাসা করেছেন! কোনও এক ভুঁইফোড় নেতা পাবলিক মিটিংয়ে বললেন, তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা চলে যাওয়ার পর আমি নাকি ওদের যিনি সবচেয়ে বড় নেতা, শাহজিকে চার বার ফোন করেছি!"


মমতা বলে চলেন, "এটা আপনারা কাল সারা ক্ষণ দেখিয়েছেন টিভিতে। কোনও কোনও কাগজেও লেখা বয়েছে। আমার থেকে এক বারও ক্রসচেক করেছেন! আবার বলছি, শাহের পদত্যাগ চেয়েছি আমি। সংবিধানকে চক্রান্ত করে ভাঙার জন্য, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় গায়ের জোরে সরকার ভাঙার জন্য, কথাবার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসুলভ আচরণ না করার জন্য পদত্য়াগ দাবি করেছি। এই পর্যন্ত। আমি তাঁকে চার বার ফোন করেছি, যিনি এ কথা যিনি বলেন, জনগণের সামনে নাকখত দিন। আমি যদি করে থাকি  আমি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেব কথা দিলাম। আর মিথ্যা কথা বলে যাঁরা প্রচার করেছেন, তাঁরা নাকখত দেবেন তো! তাঁদের নেতারা পদত্যাগ করবেন তো!"


আরও পড়ুন: Mukul Roy: সজ্ঞানেই দিল্লি গিয়েছেন, দাবি মুকুলের, বললেন, ‘CPM-কে হটানোই লক্ষ্য’


মমতা জানান, দীর্ঘ দিন রাজনীতি করছেন তিনি। ভারতবর্ষের রাজনীতি তিনি জানেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনছে বিজেপি। গালিগালাজ করা হচ্ছে। বিধানসভায় বিধায়কের সংখ্য়া কমিয়ে দেওয়ার জন্য চার বিধায়ককে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে। ED-CBI-কে দিয়ে হুমকি দেওয়াচ্ছে। BSF-CRPF নিয়ে বৈঠক করছে জায়গায় জায়গায়। ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ ভাবে দল চলে না। জেলে ঢুকিয়ে ভোট করিয়ে নাও, এ ভাবে হয় না রাজনীতি। মানুষের উন্নয়নের জন্য় কোনও কাজ করে না বিজেপি, শুধু ভোটের সময় NRC, পুলওয়ামা, নোটবন্দি এবং মিথ্যা দাবি নিয়ে ময়নাদে নামে, এই দাবিও করেন মমতা।


বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ মমতার


মমতার অভিযোগ, "বিজেপি আজ দেশের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত দল। ব্য়াপম মামলার কী হল? উত্তরপ্রদেশে এনকাউন্টারে কত জন মারা গেল? বিলকিস মামলায় সবাই জামিন পেয়ে গিয়েছে। আমাদের এখানে এমন হয় না। বিজেপি-র কথায় অনেক ছেলেমেয়ের চাকরি চলে গিয়েছে। আমরা আদালতকে সম্মান করি। ভুল হলে শুধরে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। তা না করে দু'মিনিটে গ্রেফতার করে আনো, চার মিনিটে চাকরি খেয়ে নাও, এ সব চলে না। যিনি বলছেন, তিনি সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত, ডাকাত। স্কুলে দুর্নীতি হয়ে থাকলে, সবচেয়ে বড় ডাকাত ও। মালদা-মুর্শিদাবাদ কার কাছে ছিল? মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম কার কাছে ছিল? পুরুলিয়া ভাঙিয়েও মেদিনীপুরে নিয়ে গিয়েছিল। জানতে পেরে আমি এগিয়ে যাই যে পুরুলিয়াকে বঞ্চিত করা যাবে না। রোজ মিথ্যে কথা বলে। ওর কথা শুনতে হবে?"