কলকাতা: লালন শেখের রহস্যমৃত্যু নিয়ে কার্যত ধুন্ধুমার গোটা রাজ্যে। সোমবার সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু হয় বগটুই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
কী বললেন মদন:
বগটুই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন রহস্যমৃত্যুতে এবার শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতারি দাবি করলেন মদন মিত্র। শুভেন্দুর ডিসেম্বর-তত্ত্বকে হাতিয়ার করে গ্রেফতারি দাবি মদনের। তিনি বলেন, 'শুভেন্দুই বলেছিলেন ১২ ডিসেম্বর অপারেশন হবে। সবার আগে শুভেন্দুকে দড়ি বেঁধে গ্রেফতার করা উচিত। এটা আত্মহত্যা না খুন, কে বলবে?'
বিস্ফোরক লালনের স্ত্রী:
সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ লালন শেখের স্ত্রীর। মামলা ধামাচাপা দিতে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল সিবিআই, বিস্ফোরক দাবি লালনের স্ত্রীর। খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে লালনকে, অভিযোগ লালনের স্ত্রীর।
লালনের মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার:
সিবিআই হেফাজতে বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যু ঘিরে তুলকালাম চলছে জেলায়। রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প ঘিরে লালন-ঘনিষ্ঠদের বিক্ষোভ চলেছে। সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে বিক্ষোভের পাশাপাশি জাতীয় সড়ক অবরোধ করেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সিবিআইয়ের হেফাজতে খুনের অভিযোগ তুলেছেন লালন-ঘনিষ্ঠরা। সিবিআইয়ের একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুন ছাড়াও তোলাবাজি, হুমকি-সহ একাধিক ধারায় লালনের স্ত্রী মামলা করেছেন। সিবিআই হেফাজতে রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্ত চান লালনের স্ত্রী। সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে সিবিআই দাবি করেছে যে লালনের মৃত্যু আত্মহত্যার ঘটনা।
মুখ্যমন্ত্রীর তোপ:
লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'হেফাজতে লালনের মৃত্যু নিয়ে উত্তর দিতে হবে সিবিআইকে। সিবিআই এত স্মার্ট হলে কীভাবে ঘটল এধরনের ঘটনা?'
আগে যা ঘটেছে...
গত ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে, তৃণমূলের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরই বগটুই গ্রামে সংগঠিত হয় প্রাণঘাতী হামলা! জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক বাড়ি! অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মোট ১০ জনের। সিবিআই সূত্রে দাবি, হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিল নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু-ঘনিষ্ঠ লালন শেখ। ঘটনার পর ভিন রাজ্যে গা ঢাকা দেয় লালন। ৩ ডিসেম্বর বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে লালন শেখকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৪ তারিখ আদালতে তোলা হলে ৬ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় রামপুরহাট মহকুমা আদালত। ১০ তারিখ ফের তাকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে হলে বিচারক লালনকে ফের তিন দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন। বগটুইকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ২৭ জন।