কলকাতা : 'রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যপাল চুপ থাকবেন না। ' নিশীথ প্রামাণিকের ( Nisith Pramanik ) কনভয়ে হামলার অভিযোগের ঘটনায় কড়া বার্তা দিয়েছে রাজভবন। এরপর তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'য় কড়া ভাষায় আক্জরমণ করা হয় বর্তমান রাজ্যপালকে।


মুখপত্রে লেখা হয় , জগদীপ ধনকড়ের ( Jagdeep Dhankhar ) পথ দ্রুত অনুসরণের পথে নেমে পড়েছেন বর্তমান রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে পত্রিকায় অভিযোগ 'রাজ্যপাল একতরফা বিজেপির কথা শুনে বিবৃতি দিচ্ছেন। মনে রাখতে হবে রাজ্যপাল বিজেপির ক্যাডার ছিলেন' । এখানেই থেমে নেই তৃণমূল।  রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়ে ঝাঁঝালো প্রতিক্রিয়া মদন মিত্রর ( Madan Mitra ) । কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক এদিন বলেন, 'কেউই আমাদের রাজ্যপাল নয়, বিজেপির রাজ্যপাল। এই রাজ্যপাল ভেবেছিলেন আস্তে আস্তে সিঁধ কাটব। এত সহজে আসল চেহারাটা ধরা পড়ে যাবে ভাবেননি। রাজ্যপাল এটা ভুলে গিয়েছেন, উনি অ আ ক খ শিখেছেন, কিন্তু এখনও CAT ক্যাট, BAT ব্যাট শেখেননি। পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে লড়তে গেলে পশ্চিমবঙ্গকে চিনতে হবে।  এই রাজ্যপাল অ-আ-ক-খ শিখলেও, রাজ্যের রাজনীতি শেখেননি।'

শুধু মদন মিত্র নন, মুখ খুলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। তিনি বলেন, 'রাজ্যপালের মুখ্যমন্ত্রীর উপর বিশ্বাস রাখা উচিত। উত্যক্ত করে এমন কয়েকজন নেতা গিয়ে ওঁকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। উনি শিক্ষিত মানুষ, যেন প্রভাবিত না হন' 


নিশীথের কনভয় আক্রমণের ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদ করছে বিজেপি।তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে, শনিবারই রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই অবস্থায়, রাজভবনের তরফে কড়া বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, রাজ্যে কখনও কোথাও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যপাল চুপ থাকবেন না।


রাজ্যপাল তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন, রাজ্যে কখনও কোথাও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যপাল চুপ থাকবেন না।বরং শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে কঠোর ও কার্যকরী পদক্ষেপ করা হবে। এরই সঙ্গে নবান্নকে সতর্ক করে দিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন,  আইনের শাসন বজায় রাখতে ও দুষ্কৃতীদের মোকাবিলায় অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার। ভবিষ্যতে যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় সময়মতো পদক্ষেপ করা হবে। শনিবারের ঘটনায়, কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, প্রশাসনের কাছে তার রিপোর্টও তলব করা হয়েছে।


বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিবাদ গণতন্ত্রের একটা অংশ, কিন্তু হিংসা কখনই সভ্য সমাজে স্বীকৃত নয়। যে কোনও অশান্তি রুখতে গিয়ে, পশ্চিমবঙ্গ যাতে কোনওভাবেই 'দুর্বল রাজ্য' (soft state) না হয়ে পড়ে, রাজ্যপাল হিসেবে তা দেখার দায়িত্ব আমার।যাঁরা আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। হিংসাকে নির্মূল করতে হবে। বাংলার মানুষ আশা করেন, পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা, প্রত্যেকে নির্ভয়ে ও নিরপেক্ষভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনওরকম শিথিলতা, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য তৈরি করবে। যা কখনই মেনে নেওয়া হবে না। কোনও পরিস্থিতিতেই গুন্ডাবাহিনীকে সমাজের ক্ষতি করতে দেওয়া যাবে না।


 


জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল থাকাকালীন, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল। এবার সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সম্পর্ক এবার কোন খাতে বয়, সেদিকেই নজর সকলের।