কলকাতা: বাবা, মায়ের সঙ্গে মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন ২৮ বছরের অমিয় সাহা। পুণ্যস্নানের পর হুড়োহুড়িতে পরিবারের থেকে আলাদা হয়ে যান অমিয়। প্রবল ধাক্কাধাক্কিতে বুকে আঘাত, হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা। চূড়ান্ত অব্যবস্থা, দেওয়া হয়নি ডেথ সার্টিফিকেটও, অভিযোগ পরিবারের।
মহাকুম্ভে মহাবিপর্যয়, বাংলার ৪ পুণ্যার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু। বাসন্তী পোদ্দার, ঊর্মিলা ভুঁইয়া, বিনোদ রুইদাসের পর অমিয় সাহা। মহাকুম্ভে গিয়ে মালদার বৈষ্ণবনগরের স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু। ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই দেহ প্রয়াগরাজ থেকে ছাড়ার অভিযোগ। মৌনি অমাবস্যা মহাকুম্ভে দ্বিতীয় শাহি স্নানের পুণ্যযোগে ভোর ৫টায় শাহি স্নানের কথা ছিল। মাঝরাত থেকেই মহাকুম্ভের নানা ঘাটে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন। রাত ২টো নাগাদ সঙ্গমের কাছে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। তার মধ্যেই অনেকে দৌড়তে শুরু করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
মৌনি অমাবস্যায় মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী।দুর্ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে ফোনে ৩ বার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। খোঁজ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা-ও। সকালে যোগী আদিত্যনাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব, DGP, ADG আইন শৃঙ্খলা, স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রধান সচিব-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ভিড় সামলাতে কোথায় ত্রুটি, দোষী আধিকারিকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।
কুম্ভমেলায় পুণ্যস্নানে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েও বরাত জোরে প্রাণে বেঁচেছেন শুক্লা দেবনাথ। আলিপুরদুয়ারের হাসিমারা থেকে একাই গেছিলেন পুণ্য অর্জনে। মহিলার অভিযোগ, পদপিষ্ট হওয়ার পর কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। পুলিশের দেখা মেলেনি। গাছের নীচে রাত কেটেছে। জল-খাবার কিছুই মেলেনি। ফিরবেন কী করে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। এবিপি আনন্দ-কে প্রয়াগরাজ থেকে ভিডিওকলে নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন শুক্লা দেবনাথ।
আরও খবর, পুণ্য অর্জনে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি, মহাকুম্ভে মৃত বাংলার ৩
তিনি বলেন,' আমি একজন বৃদ্ধমাকে বাঁচাতে গিয়ে, পদপিষ্ট হই। ..এরপর আমার উপর আরও ২০ জন পড়ে যায়। এবং ২০ জন পড়ার পর, আধাঘণ্টা ধরে কেউ বাঁচাতে আসেনি। অনেকবার আর্তনাদের পরও তিনি কারও সাহায্য পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি।আমি একজন সমাজকর্মী। আমার উপরে যে ২০ জন পড়েছে, তাঁদের প্রাণ আছে কিনা, আমি তাও জানি না। কিন্তু ওই ২০ জনের মধ্যে আমি একজন সাক্ষী, যে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে, আমি বের হয়েছি ওখান থেকে। আমি তো জ্ঞান হারিয়েছিলাম। আমার আর কিছু মনে নেই। ওখানে একজন মেয়ে আমার চোখে মুখে জল দেয়। আমার সারা শরীর আঘাতে আঘাতে ভরা।