কলকাতা : 'আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান' কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার মহেশতলায়। মহেশতলা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ওঠে 'চোর' স্লোগান। স্লোগান দিতে দিতে কাউন্সিলরকে ধাওয়া করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ গিয়ে কাউন্সিলরকে উদ্ধার করে আনে। ওয়ার্ডে জল জমার সমস্যা-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে বাসিন্দাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা সাদ্দাম হালদার বলেন, "ভোটে দাঁড়িয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতজোড় করে বলেন, আমাকে এবার ভোটটা দিয়ে দিন। আমার তো বয়স হয়ে গেছে। আমি কিন্তু জিতে গেলে কাজ করব। হেরে গেলে পুরো টিএমসি পার্টি ছেড়ে দেব। এরকমভাবে বললেন। তারপর দীর্ঘ ৫ বছর হয়ে যাচ্ছে, বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও কাজই করেননি। রাস্তা সবসময় ডুবে যায়। সবসময় জল। না, খাল নিকাশন ব্যবস্থা পরিষ্কার হচ্ছে, কোনও কাজই ভালভাবে হচ্ছে না।" রাকেশ মল্লিক নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, "আমরা সরকার নির্বাচিত করেছি, কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছি...আমাদের এলাকার ড্রেনস পুকুরঘাট এগুলো পরিষ্কার করানোর জন্য। আমরা দেখছি, কাউন্সিলর কোনও কাজ করেন না। আমাদের নিজেদের পকেটের পয়সা দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করানো হচ্ছে। রাস্তার স্ল্যাব খুলে ড্রেন পরিষ্কার করানো হচ্ছে। কিন্তু, কাউন্সিলর তহবিল থেকে এখানে কিছু দেন না। কাউন্সিলরের একটা কাজ মাস্ট, এখানে যত পুকুর আছে সব ভরাট করে প্রোমোটারি করে টাকা খেয়ে নিয়েছেন। এমনকী গরিব মানুষ যদি লোন নিয়ে ছাদ ঢালাই দেন, সেখানে গিয়ে বলে দেবেন ২০ হাজার টাকা দিতে হবে।"

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "মানুষ তাঁর ক্ষোভ জানিয়েছেন। আমি চেষ্টা করেছি তার প্রশমন করতে। কোনও বিক্ষোভ না...এরা আমার দলের লোক নন কেউ। এরা বিরোধী দলের লোক। সিপিএম আশ্রিত লোক এরা।" Meaheshtala Municipality     

গত জুন মাসে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল মহেশতলা। মহেশতলার রবীন্দ্র নগর থানার সামনেই পুলিশের বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় বাড়িগুলিতে। পাথর ছুড়ে ভাঙা হয় পুলিশের গাড়ির কাচও। বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে নাগাড়ে ইটবৃষ্টি হতে থাকে পুলিশের উপর। রাস্তার একধার থেকে পুলিশের দিকে বড় বড় পাথর ছুড়তে থাকে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের তরফে টিয়ার গ্যাস অর্থাৎ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। তাতেও প্রথমে লাভ হয়নি কিছু। উল্টে পুলিশকে নতুন উদ্যমে আক্রমণ করতে শুরু করে উন্মত্ত দুষ্কৃতীরা। দোকান বসানো নিয়ে শুরু হয়েছিল সমস্যা। আর তার থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মহেশতলা।