করুণাময় সিংহ, চাঁচল: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মালদার (Malda News) চাঁচলে (Chanchal News) ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠী কোন্দল। অঞ্চল ও ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ। বিধায়কের বিরুদ্ধে ঠিকাদার নিয়ে দল পরিচালনা করার অভিযোগ মালদা জেলা পরিষদ সদস্য সামিউল ইসলামের। জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির কাছে বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি সামিউলের।


তৃণমূলের অন্তর্কলহ ফের প্রকাশ্যে


তবে কোন্দলে ইতি টানা তো দূর, পাল্টা সামিউলকে কটাক্ষ করেছেন বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের। তাঁর বক্তব্য, "যারা বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল ,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোট করেছিল, তাদের মুখে এ কথা শোভা পায় না।" পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কে টিকিট পাবেন, দল কাকে টিকিট দেবে, তা নিয়েই তৃণমূলের অন্দরে কলহ শুরু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। 


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মালদার চাঁচল আসন থেকে জয়লাভ করেন তৃণমূল প্রার্থী নীহাররঞ্জন। এর পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে জেলা পরিষদ সদস্য সামিউল ইসলামের সাথে বিরোধ শুরু হয় তাঁর। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাক্কালে সেই বিরোধ আরও প্রকট হয়ে উঠেছে বলে শোনা যাচ্ছে। জেলা পরিষদ সদস্য সামিউল ইসলামের অভিযোগ, ভাড়া বাড়িতে থেকে কয়েক জন ঠিকাদার নিয়ে দল পরিচালনা করছেন নীহাররঞ্জন। স্বৈরতন্ত্র চালাচ্ছেন তিনি। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না পুরনো কর্মীদের।


এমনকি সামিউলের দাবি, অঞ্চল এবং ব্লক কমিটি গঠনেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না জেলা পরিষদ সদস্যকে। তিনি বলেন, "২০১৪ সাল থেকে আমরা দলকে তৈরি করেছি। আর উনি পরিযায়ী বিধায়ক, অন্যদের দিয়ে ফসল কাটিয়ে নিয়ে যাবেন, এটা মেনে নেব না। জেলা সভাপতিকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এই বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।"  


আরও পড়ুন: TET Agitation: কুণালের সঙ্গে বৈঠকে গলল বরফ! ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়ে আন্দোলন তুললেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ


পাল্টা জেলা পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নিহার রঞ্জন ঘোষ। তিনি বলেন বিধানসভা নির্বাচনে যারা বিরোধীদের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোট করেছিল। তাদের মুখে এই ধরনের কথা শোভা পায় না। এখনো অঞ্চল ব্লক কমিটি গঠন হয়নি। এই ধরনের কথা বলে দলকে বিপদে ফেলা ও দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমি বিধায়ক ছিলাম না তখন আটটা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র দুটো গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল তৃণমূল।আসলে মানুষ থেকে এরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন তাই এই ধরনের কথা বলছেন।                                                


পাল্টা জেলা পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে খুব উগরে দিয়েছেন চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন। তিনি বলেন, "বিধানসভা নির্বাচনে যারা বিরোধীদের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোট করেছিল, তাদের মুখে এই ধরনের কথা শোভা পায় না। এখনও অঞ্চল ব্লক কমিটি গঠন হয়নি। এই ধরনের কথা বলে দলকে বিপদে ফেলা ও দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমি বিধায়ক ছিলাম না। তখন আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র দু'টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল তৃণমূল। আসলে মানুষের থেকে এঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন। তাই এই ধরনের কথা বলছেন।"              


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৃণমূলে!


এমন প্রকাশ্য কলহ নিয়ে তবে ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি।  দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, "সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। কেউ কেউ টিকিট পাবে কিনা, সন্দেহ আছে। আবার কে কাকে টিকিট দেবে, সেই বিষয়টিও আছে। সেই নিয়েই ওদের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকট হয়ে উঠেছে। কারণ পঞ্চায়েত ছাড়া এরা বাঁচতে পারবে না।"  এ নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব যদিও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।