অভিজিৎ চৌধুরী, করুণাময় সিংহ, হরিশচন্দ্রপুর: চিকিৎসার অভাবে দুই পূর্ণবয়স্ক হরিণের মৃত্যু। গুরুতর অসুস্থ আরও একটি হরিণ। মালদার ডিয়ার পার্কের অবস্থা নিয়ে তাই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পশু স্বাস্থ্যের বেহাল দশা বলে উঠছে অভিযোগ। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে BJP-ও। সেই নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে। (Malda News)


মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর ২ নং ব্লক দফতরের পাশেই রয়েছে বারোদুয়ারি ডিয়ার পার্ক। সেখানে মোট ৩২টি হরিণ ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার দু'টি পূর্ণবয়স্ক হরিণের মৃত্যু হয়। অসুস্থ হয়ে পড়েছে আরও একটি হরিণ। এলাকায় ঝকঝকে পশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলে, না আছে চিকিৎসক, না আছে পরিষেবা, সবকিছুর বেহাল দশা বলে অভিযোগ উঠছে। (Malda Deer Park)


ওই দুই হরিণের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়নি এখনও পর্যন্ত। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে তাদের দেহ। মূলত এই ডিয়ার পার্কের দেখভাল করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক তাপসকুমার পাল। তিনি জানিয়েছেন, হরিণদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে। পশুপ্রেমী বিডিও নিজে দায়িত্ব নিয়ে হরিণদের যত্নআত্তি করেন। সময় মতো খাবার দেন। আসল সমস্যা চিকিৎসা নিয়ে। 


আরও পড়ুন: Sandeshkhali Chaos: সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতার বাড়ির উঠোনে পুলিশ পিকেট, সিসি ক্যামেরায় নজরদারি


পশুদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং চিকিৎসক নেই বলে সরব হয়েছেন খোদ BDO-ও.  অভিযোগের সুরে তিনি জানান, যথোপযুক্ত খাদ্য পাচ্ছে না হরিণগুলি। পরিচর্যা হলেও, অসুস্থ হলে নেই চিকিৎসার ব্য়বস্থা। কোনও স্থায়ী চিকিৎসকই নেই। পশুদের চিকিৎসার জন্য যে চিকিৎসক নেই, তা মেনে নিয়েছেন পশু স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত খুটিয়াও। 


এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পশুপ্রেমীরাও। এর আগে, সাধারণ মানুষও বার বার অভিযোগ জানিয়েছেন। তার পরও প্রশাসনের টনক নড়েনি বলে অভিযোগ। দীর্ঘ দিন ধরে সেখানে কোনও স্থায়ী পশু চিকিৎসক নেই বলে, তাতে সমস্যা বাড়ছে বলে জানা গিয়েছে। তাই চিকিৎসার অভাবে দুই হরিণের মৃত্যুর খবর সামনে আসতে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। BJP-র দাবি, তৃণমূলের আমলে মানুষ, পশু, কেউই চিকিৎসা পাচ্ছে না।


জেলা বিজেপি-র নেতা কিষাণ কেডিয়ার বলেন, "এই রাজ্যে মানুষও স্বাস্থ্য পরিষেবা পাচ্ছেন না, পশুরাও পাচ্ছে না। ঝাঁ চকচকে ভবনের নামে শুধুই আইওয়াশ।" যদিও তৃণমূলের সভাপতি জিয়াউর রহমানের বক্তব্য, "ঐতিহ্যবাহী ডিয়ার পার্কে দু'টি হরিণের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু ওই পার্কে তৃণমূল সৌন্দর্যায়নের কাজ করেছে। যেটা দীর্ঘদিনের বাম আমলে হয়নি।ঠ এই বিষয়ে তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন জিয়াউর।" পশুপ্রেমীরা প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও, হরিণ মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সকলেই।