করুণাময় সিংহ, মালদা: গরম পড়তেই পানীয় জলের সঙ্কট জেলাজুড়ে। দক্ষিণবঙ্গের মতোই উত্তরবঙ্গেও এক ছবি। জলের অভাব, আর সেই কারণেই প্রবল ভোগান্তি বাসিন্দাদের। মালদার চাঁচলে পানীয় জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পানীয় জলের দাবিতে বালতি, কলসি নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হলেন স্থানীয় মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, ছবি মণ্ডল নামে এলাকার এক মহিলা পিএইচই (PHE) প্রকল্পের দরজায় তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। সেই কারণেই মিলছে না পানীয় জল। ওই মহিলার পাল্টা দাবি, চাকরি পেলে তবেই পানীয় জল পাবেন গ্রামবাসীরা। এই নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।
চাকরি পেলে তবেই পানীয় জল পাবেন গ্রামবাসীরা। গ্রামেরই এক মহিলার এই হুঁশিয়ারির জেরে পানীয় জলের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত গোটা গ্রাম। পানীয় জলের দাবিতে বালতি, কলসি নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হলেন গ্রামের মহিলারা। মালদার চাঁচলের দৈভাত্তা গ্রামে প্রায় ৪০০ পরিবারের বসবাস। পানীয় জলের সঙ্কট মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে, বাড়ি বাড়ি জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তিন বছর কেটে গেলেও মেলেনি পানীয় জল। বারবার প্রশাসনিক দফতরে জানানোর পরেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
কেন এই সমস্যা?
পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কী কারণে মিলছে না জল? গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ছবি মণ্ডল নামে এলাকার এক মহিলা জনস্বাস্থ্য কারিগরির প্রকল্পের দরজায় তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। চাঁচলের দৈভাত্তার বাসিন্দা চন্দনা দাস বলেন, 'রাতের বেলা আতঙ্কের মধ্যে জল আনতে যেতে হয় মহিলাদের।পুকুরের জল শুকিয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা স্বাভাবিক ভাবে স্নান করতে পারছেন না।' গরমের দাপটের মধ্যেই তীব্র জলকষ্ট। কিন্তু মন গলেনি ওই মহিলার। তাঁর দাবি, প্রকল্প যেহেতু তাঁর জায়গায়, তাই চাকরি না দিলে তালা খুলবেন না।
ছবি মণ্ডলের দাবি, 'আমার জায়গায় পিএইচই প্রকল্প বসানো হয়েছে।আমি কেন চাকরি পাবনা।চাকরি না দিলে আমি তালা খুলব না।তবে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামবাসীরা আমাকে সহযোগিতা করলেই তালা খুলে দিব।' আর এনিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।
চাঁচল ১ -এর বিজেপির সহ-আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন, 'রাজ্য সরকার ও তার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর পানীয় জলের পরিষেবা দিতে ব্যর্থ।আধিকারিকেরা নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছে।' চাঁচল ১ -এর কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আঞ্জারুল হক বলেন, 'তৃণমূলের আমলে টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়। ওই মহিলাকে চাকরি টোপ দিয়ে পিএইচই বসিয়েছে। তৃণমূল প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেননি। যার জেরে জল সঙ্কটে ভুগছে গোটা গ্রাম।' চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, 'পিএইচই দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে জল সঙ্কটের বিষয়টি তুলে ধরেছি। দ্রুত জল পরিষেবা স্বাভাবিক হবে। তবে বিজেপি ও কংগ্রেস মানুষের সাথে বঞ্চনা করে। তাদের পাশে মানুষ নেই।'
জেলাশাসক জানিয়েছেন, দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চাকরির বিষয়টি PHE-র সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে কি পানীয় জল পরিষেবা স্বাভাবিক হবে মালদার এই গ্রামে? অপেক্ষায় আছেন গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন: সল্টলেকে বিধ্বংসী আগুন, মুহূ্র্মুহু বিস্ফোরণের শব্দে তীব্র আতঙ্কে এলাকাবাসীরা