করুণাময় সিংহ, চাঁচল: ভুল বুঝিয়ে টিপছাপ দিয়ে আবাস যোজনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের মহানন্দপুর পঞ্চায়েতের মল্লিকপাড়া গ্রাম। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা বৃদ্ধা ফাতেমা বেওয়া। বিধবা ওই বৃদ্ধার কাছ থেকে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকা লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে। টাকা ফেরতের দাবি নিয়ে থানা ও বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধা। অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাহাজান আলির দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নেতা।
মল্লিকপাড়া গ্রামে একাই থাকেন ফাতেমা বেওয়া। বছর দশেক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। পড়শিদের সাহায্যে কোনওরকমে পেট চলে তাঁর। ঘর বলতে বাঁশের বেড়া, আর উপরে টিনের চাল। শেষ বয়সে মাথার উপরে পাকা ছাদের আশায় আবেদন করেছিলেন আবাস যোজনায়। শেষপর্যন্ত নামও ওঠে তাঁর। তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢোকে যোজনার প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকা। বৃদ্ধার অভিযোগ, সেই খবর পেয়েছিলেন সাহাজান। তিনিই ভুল বুঝিয়ে ব্যাঙ্কের শাখায় নিয়ে গিয়ে টিপ ছাপ নিয়েছেন। তারপরেই টাকা গায়েব হয়ে যায় বলে অভিযোগ বৃদ্ধার। ফাতেমা বেওয়ার অভিযোগ, 'গ্রামের তৃণমূল নেতা সাহাজান আলি ও তাঁর স্ত্রী রিনা খাতুন আমাকে ব্যাঙ্কে নিয়ে গিয়ে টিপছাপ দিতে বলে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে বলে হুমকি দিচ্ছে।' বিষয়টি নিয়ে চাঁচল ১ নম্বর ব্লক অফিসে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা।
যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সাহাজান। তিনি বলেন, 'এটা নাকি বিরোধীদের চক্রান্ত।' বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। মালদা জেলা যুবমোর্চার সহ সভাপতি সুমিত সরকার বলেন,'তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতে লুঠ চলছে। এটাকে দুয়ারে লুঠ বলে।' তৃণমূলের মালদা জেলা সাধারণ সম্পাদক সামিউল ইসলাম পাল্টা বলেন, 'বিজেপির অস্তিত্ব নেই রাজ্যে। ওই তৃণমূল নেতার দোষ প্রমাণ হলে দলের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।'
চাঁচলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায় জানিয়েছেন, গুরুত্ব দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
আরও পড়ুন: পুরভোটের আগে বিজেপিতে ফের ভাঙন, ইংরেজবাজারে তৃণমূলে যোগ শতাধিক কর্মীর