করুণাময় সিংহ, মালদা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাবল্য কিছুটা স্তিমিত হয়ে এসেছে রাজ্যে। কিন্তু নতুন করে চিন্তা বাড়ল মালদায়। একই রকমের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হচ্ছে বেশ কিছু শিশু। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে একরত্তিদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। চিকিৎসকদের পরিভাষায় এ হল, মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম ইন চিলড্রেন। সংক্ষেপে যাকে বলা হয় MISC। অসুস্থতার পিছনে করোনারই হাত দেখছেন চিকিৎসকদের একাংশ।


এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কার নতুন মেঘ উঁকি দিয়েছে মালদা জেলায়। মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন স্তিমিত হয়ে এসেছে, তখন হঠাতই শিশুদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর মিলছে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, শরীরে লাল দাগ, বমি, পেট খারাপের মতো একাধিক উপসর্গ নিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বর্তমানে এই অসুখে আক্রান্ত হয়ে শুধুমাত্র মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছে ২০ জন শিশু। চিকিৎসকদের অনুমান, একসঙ্গে এতজন শিশুর একই ভাবে অসুস্থ হওয়ার পিছনে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব থাকতে পারে। 


মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান সুষমা সাহু বলেন,  "মার্চ ,এপ্রিল , মে, তিন মাসে বাচ্চাদের বাবা-মা কিংবা বাড়ির লোকজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেই সময়ে অনেক বাচ্চা তাদের সান্নিধ্যে এসেছিল। কিন্তু বাচ্চাদের মধ্যে সেই সময় করোনার কোন উপসর্গ ধরা পড়েনি উপসর্গ না থাকায় তাদের করোনা পরীক্ষা করা হয়নি। কিন্তু এখন সেই বাচ্চাদের মধ্যে জ্বর, চোখ লাল  হওয়া, ঠোট লাল হওয়া, গায়ে রাশ তৈরি হওয়ার মতো কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।"


করোনা পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, মারণ ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে মালদা জেলায় শিশুদের অসুস্থতায় বেড়েছে উদ্বেগ। সুষমা সাহুর কথায়, এমন উপসর্গ থাকলেই বাচ্চাদের করোনা হয়েছে তা বলা যাবে না। এটা করোনা পরবর্তী ক্লিনিক্যাল সিনড্রোম। মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোমে এখন বাচ্চারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। গত একমাস ধরে মালদা মেডিকেল কলেজে আমরা এরকম ধরনের উপসর্গ যুক্ত বাচ্চা বেশি করে পাচ্ছি।


মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরা তৈরি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আক্রান্ত শিশুরা যাতে দ্রুত চিকিৎসা পায়, তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।