করুণাময় সিংহ, মালদা: জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন সদস্যরা কথা বলুন, তবে তাঁদের সঙ্গে যেন কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা না থাকেন। তিলজলাকাণ্ডে সংঘাতের আবহেই মালদা গাজোলেও সম্মুখ সমরে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন ও রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন পৌঁছনোর আগেই গাজোলে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যায় রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। তাঁদের দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়কও।
তিলজলার পরে গাজোল। ফের কেন্দ্র ও রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনরা জড়িয়ে পড়লেন তরজায়! নির্যাতিতার বাড়ির উঠোনেই চলল চাপানউতোর! হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি চলল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। জুতো হাতে বিজেপি কর্মীদের দিকে তেড়ে গেলেন তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য!
তিলজলা নিয়ে সংঘাতের আবহেই মালদার গাজলেও কার্যত সম্মুখসমরে জাতীয় এবং রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের ২ চেয়ারপার্সন। তর্কাতর্কি, হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি, তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যকে তাড়া- বাদ গেল না কিছুই। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে চলল টানটান নাটক। ১৮ মার্চ গাজোলে সকুলে ঢুকে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
১৩ দিন পর শনিবার সকালে নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছন রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্য়ান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। গাড়ি থেকে নেমেই চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির এক আধিকারিককে ধমক দেন তিনি। নির্যাতিতার বাড়ির উঠোনে, রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়কে দেখে প্রিয়াঙ্ক কানুনগো বলেন,আপনি এখানে কেন? আপনি থাকলে আমি যাব না। এরপর, বেরিয়ে যান জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন।
কিছুক্ষণের মধ্য়েই, গাজোলের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মনের নেতৃত্বে নির্যাতিতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। এরপর, ফের নির্যাতিতার বাড়ির ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্য়ান। কিন্তু, রাজ্য ও জাতীয় কমিশনের ২ চেয়ারপার্সনের মধ্য়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়।
বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফোনে মালদার অতিরিক্ত জেলা শাসককে ধমক দেন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। নির্যাতিতার বাড়ির সামনে বিজেপির বিক্ষোভ চলছিলই। এরপর জেলা পরিষদ সদস্য সাগরিকা সরকারের নেতৃত্বে সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তৃণমূলও। তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য নির্যাতিতার বাড়িতে ঢুকতে গেলে, তাঁকে বাধা দেয় বিজেপি। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পাল্টা জুতো খুলে মারতে যান তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্য। বাড়ির উঠোনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-বিজেপি। তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্যকে তাড়া করে বিজেপি। আর এই গোটা ঘটনার মধ্য়ে দরজা বন্ধ করে ঘরে বসে রইল নির্যাতিতা কিশোরী।