মালদহের (Malda) চাঁচোলে মালতীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ। রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, বেডের অভাবে মেঝেতেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের। সেইসঙ্গে এই গরমে পাখা থাকলেও তা চলছে না বলে দাবি রোগীর আত্মীয়দের। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ রোগী ও আত্মীয়রা। সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর। বিধায়কের এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা বেহাল বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। স্বাস্থ্য দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, দ্রুত সমাধান হবে, দাবি তৃণমূলের।
ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক
বেহাল দশা সরকারি হাসপাতালের।রোগীরা শুয়ে রয়েছেন হাসপাতালের মেঝেতে।মালদহের চাঁচোলে মালতীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে বেডে নয়, একেবারে মেঝেতে জায়গা দেওয়া হয়েছে রোগীদের, বলে অভিযোগ উঠেছে। ভ্যাপসা গরমে শরীর থেকে অঝোরে ঘাম ঝরছে। মাথার উপর বৈদ্যুতিক পাখা রয়েছে বটে, তবে তা চলে না। হাসপাতালে পানীয় জলেরও সঠিক ব্যবস্থা নেই।বাইরের দোকান থেকে বোতলবন্দি পানীয় জল কিনে আনতে হয় চিকিৎসাধীনদের বাড়ির লোকজনকে। এক-দু’দিন নয়,মালদার মালতিপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এই দশা চলছে বছরের পর বছর।যদিও এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তৃণমূল বিধায়কের উপরে অভিযোগ তুলে ফুঁসছে বিজেপি
তবে তৃণমূল বিধায়কের উপরে অভিযোগ তুলে ফুঁসছে বিজেপি। বিজেপির তরফে অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক থাকা সত্ত্বেও কিছু সমস্যার সমাধান হয়নি। তবে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন, এই ইস্যুটি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। রোগীর পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে, যে তারা দিনের পর দিন বেড পাননি। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা দীর্ঘ দিন ধরেই মাটিতে ঠাই হয়েছে হাসপতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের। রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, বেডের অভাবে মেঝেতেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের। সেইসঙ্গে এই গরমে পাখা থাকলেও তা চলছে না বলে দাবি রোগীর আত্মীয়দের। এই পুরো ঘটনায় ক্ষুব্ধ রোগী ও আত্মীয়রা।
পাখা থাকলেও,তা বিকল, ভ্যাপসা গরমে এইভাবে কাটছে হাসপাতালে
উল্লেখ্য,মালতিপুর বিধানসভার লক্ষাধিক মানুষ ওই সরকারি হাসপাতালে জরুরি ও অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসেন।তবে হাসপাতালে এসেই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে অভিযোগ।হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে বেড না থাকায় আশ্রয় হচ্ছে বারান্দার মেঝেতে।সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই শয্যাসায়ী অবস্থায় চিকিৎসা চলে। চিকিৎসাধীন এক রোগী মোহাম্মদ সোয়েল আলী জানান,বেড পায়নি,তাই মেঝেতেই কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে।মেজেতে মশার উপদ্রবে ঘুম আসেনা।এমনকি পাখা থাকলেও,তা বিকল রয়েছে।ভ্যাপসা গরমে এইভাবে কাটছে হাসপাতালে। মূলত,শুধু সোয়েল নয়,বারান্দার মেঝেতে দুই সারিতে প্রায় ২০ জন রোগী এভাবেই রয়েছে।
রাজ্যের হাসপাতালে অভিযোগ
প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার নয়, রাজ্যে আগেও এই ধরণের অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও মাটিতে শুয়ে রয়েছে রোগী, এমন অভিযোগ বারবার না এলেও তবে ডেঙ্গু ইস্যুতে রাজ্যের অপর এক জেলায় গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল গতবছর। শিরোণামে উঠে আসে পানিহাটি হাসপাতাল। তবে কোভিডের সময় আরও এক ঝাঁক হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। তার মধ্যে সোডপুর, দমদম, পার্কসার্কাস সহ একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে অভিযোগ ওঠে। কোথাও বিশাল বড় বিল, কোথাওবা মৃত্যু পরেও ভর্তি রাখা এবং মৃত্যুর কারণ নিয়ে। তবে এখন সেইসময় অতীত। কোভিডের ততটা উদ্বেগ না থাকলেও, মালদহের (Malda) চাঁচোলে মালতীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পরিষেবা নিয়েই মূলত অভিযোগ জানিয়েছে, রোগীর পরিবার সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা।