করুণাময় সিংহ, মালদা: বিরোধী দল ভোট পাওয়ায় সেই এলাকায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে শাসক দলের নেতাদের অনেককেই। সম্প্রতি কুণাল-শিউলির মুখে শোনা গিয়েছে- সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে-তাঁদের হুঁশিয়ারি নিয়ে বিতর্কও বেঁধেছে। এবার একই ছবি মালদায়। লোকসভা ভোটে দক্ষিণ মালদার ইংরেজবাজার পুরসভায় ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। একই অবস্থা  সেখানকার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডে লিড পেয়েছে বিজেপি। তারপরেই পোস্টার পড়ল  সেই এলাকায়। 


যেহেতু ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে এগিয়ে আছে বিজেপি, তাই এবার বিজেপির লোকেদের দিয়েই কাজ করাতে হবে বলে পোস্টার পড়েছে ওই ওয়ার্ডের কুলিপারা এলাকায়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটের অঙ্কের ব্যবধানের বিষয় নিয়ে পোস্টার পড়তেই রীতিমতো রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব । বিজেপির যাবি এই ধরনের পোস্টার না দিয়ে বরং তৃণমূল বলে দিক তারা পুরসভা চালাতে পারছেন না।


কী রয়েছে ওই পোস্টারে?
ওই পোস্টারে উল্লেখ রয়েছে, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ভোট পেয়েছে ১৮৫টি, সেখানে বিজেপি ৭৬০টি ভোট পেয়েছে। তাই এবার থেকে সব কাজ বিজেপির কাছ থেকে করান। হিন্দি ভাষায় এই পোস্টার পরেছে এলাকায়। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুলিপাড়া এলাকায় মূলত হিন্দিভাষী মানুষ বসবাস করেন। আর এই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ওই পোস্টার পড়েছে। গত পুরভোটে জিতে এখন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাকলি কর্মকার জানান, 'কে পোস্টার লাগিয়েছে আমাদের জানা নেই। আমরা প্রতিদিন নাগরিক পরিষেবার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ।'


বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, 'গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিয়েছে। বিজেপি সেখানে সমস্ত বুথেই লিড দিয়েছে। সেখানে আমরা দেখলাম তৃণমূল দল বিজেপির নামে একটা পোস্টারিং করেছে। তারা মানুষের পরিষেবা দেবে না। যারা পরিষেবা নিতে চায় তারা বিজেপির কাছে যাক। এটা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। কারণ সেখানকার কাউন্সিলর তৃণমূলের, বোর্ডও তৃণমূলের, তারা যদি পরিষেবা দিতে না পারে তারা খোলাখুলি বলুক, আমরা চিন্তা করব।'


তৃণমূল পরিচালিত ইংরেজবাজার পুসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, 'এই ধরনের কাজ আমরা করি না। এটা করেছে অতি উৎসাহী বিজেপিগুলো। এই বিজেপি গুলো করেছে যে আমরা এত ভোটে জিতেছি এরপর থেকে যদি কোন কাজ পড়ে তাহলে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা যারা পৌরসভার কাউন্সিলর আছি যাতে আমাদের কাছে না আসে ওদের কাছে যেতে হবে এটা ওদেরই কাজ। আমরা যদি করতাম তাহলে প্রতিটা ওয়ার্ডে একই মেসেজ যেত। কখনোই আমরা এ ধরনের কাজ করি না। আমাদের নেত্রী বারবার বলছে হারি আর জিতি সব সময় মানুষের ম্যান্ডেটকে মানতে হবে মানুষের পাশে থাকতে হবে।



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: মিটিং হল কিন্তু আলোচনায় এল না বিজেপির 'বাংলার রেজাল্ট'! কেন?