করুণাময় সিংহ ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, মালদা: টাকা উদ্ধার ঘিরে টান টান উত্তেজনার পর মালদার (malda) মাছ ব্যবসায়ী (fish trader) জয়প্রকাশ সাহাকে গ্রেফতার করল সিআইডি। তদন্তকারীদের দাবি, তাঁর বাড়ি থেকে যে বিপুল অঙ্কের টাকা (money) উদ্ধার হয়েছে তার সঙ্গে মাদক কারবারের (drug trafficking) নির্দিষ্ট যোগ রয়েছে। গোপন সূত্রে সে রকম খবর পেয়েই জয়প্রকাশের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় সিআইডি (CID)। ঘণ্টাসাতেকের তল্লাশির পর মাছ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকারও বেশি উদ্ধার হয় বলে খবর।
কোথা থেকে এল টাকা?
এক মাছ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে এই বিশাল অঙ্কের টাকা উদ্ধার হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই তার উৎস ঘিরে প্রশ্ন তৈরি হয়। স্রেফ মাছের ব্যবসা নাকি আড়ালে মাদকের কারবার চালাতেন জয়প্রকাশ? তৈরি হয় নানা জল্পনা। দিনভর টানা উত্তেজনা শেষে সন্ধের দিকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি। উদ্ধার হওয়া টাকা ও ধৃতকে গাজোল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে গাজোলে সিআইডির দফতরে নিয়ে যাওয়ার কথা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নিষিদ্ধ কাফ সিরাপের ব্যবসা করেই এই বিপুল অঙ্কের টাকা জমিয়েছিলেন তিনি। জয়প্রকাশের বাড়িতে যে বেআইনি ভাবে বিশাল অর্থ রাখা রয়েছে, গোপন সূত্র মারফৎ সেই সন্ধান পেয়েই তল্লাশি চালায় সিআইডি। ৩ ঘণ্টা ধরে চলে টাকা গোনার কাজ। আপাতত মামলা রুজু করে পরবর্তী ধাপের তদন্ত করবে সিআইডি। কী ভাবে ওই টাকা এল, কোথা থেকে এল, আর কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত--সবটা খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া...
সিআইডি-র এই তৎপরতাকে মোটের উপর স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী শিবির। রাজ্যের বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য যেমন বলেন, 'সিআইডি এমন টাকা উদ্ধার করতে যাচ্ছে দেখে ভাল লাগছে। ইডি ও সিবিআইয়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সিআইডি এই কাজ করছে। রাজ্যের মানুষ এটা ইতিবাচক ভাবে দেখছেন।' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর আবার মন্তব্য,' সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে লুঠেরাদের রাজত্ব চলছে, এটাই তার প্রমাণ। মাদকপাচার, জাল টাকা পাচার, নারী পাচার...পশ্চিমবঙ্গ এসবের স্বর্গরাজ্যে রূপান্তরিত হয়েছে। তবে সিআইডি এটা করছে দেখে ভাল লাগছে।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর আবার সমালোচনা, 'এ রাজত্বে টাকা এখন খোলামকুচি। যেখানে যখন যাবেন,একটু প্রভাবশালী হলেই হল। পাচারকারী হলেই প্রভাবশালী।' তবে পাশাপাশি সিআইডির এই হঠাৎ সক্রিয়তা নিয়েও পরোক্ষে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, 'এটা একেবারে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয়। তৃণমূলের তরফ থেকে কোনও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নেই।'
আরও পড়ুন:হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ব্যবহারে দিতে হবে টাকা ! কী বলছে কোম্পানি?