করুণাময় সিংহ, মালদা: ফের 'হুঙ্কার-হুঁশিয়ারি'! এবার বিজেপির সাংসদ-বিধায়কদের জিব টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার 'বিধান' দেওয়ার অভিযোগ উঠল জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সির (Malatipur TMC MLA Abdur Rahim Boxi)  বিরুদ্ধে। মালদার বামনগোলায় পথসভা থেকে এমন আক্রমণ শানান তিনি, অভিযোগ সে রকমই। এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল, পাল্টা আক্রমণে বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মু। 


কী বলেছেন?
অভিযোগ, মালদার বামনগোলার পথসভা থেকে আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, '... যে মুখ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন, যে মুখ দিয়ে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, সেই মুখ থেকে জিবটা টেনে বের করে মানুষ প্রমাণ করবেন যে তাঁরা আপনাদের সঙ্গে নেই।' আরও সংযোজন, 'বুক চিতিয়ে বলে যাচ্ছি, এই কলোনির হাটে যে রাস্তাগুলো হয়নি, এখানে কেন্দ্রীয় সরকার যত বঞ্চনা করুক, খগেন মুর্মু যত বঞ্চনা করুন, জুয়েল মুর্মু যত বিরোধিতা করুন, বিজেপি যত বিরোধিতা করুক, সমস্ত রাস্তা তৃণমূল কংগ্রেস করবে করবে।' রাজ্যের শাসকদল যে বার্ধক্য ভাতারও ব্যবস্থা করবে, সেকথাও মনে করান মালতিপুরের বিধায়ক। অঙ্গীকার লড়াই চলবে, বাড়ির জন্যও। এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথাও তোলেন আব্দুর রহিম বক্সি। বলেন, 'বিগত দিনে  বামন গোলার মানুষ প্রমাণ করেছেন, আমরা জাতপাতের রাজনীতি করি না। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুটো জেলা পরিষদ জিতিয়ে, ৫ টা গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি জিতিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন, যে খগেন বাবুর বিজেপির স্থান বামন গোলের মাটিতে আর নেই। আপনি যতই চেষ্টা করুন বামনগোলার মাটিতে আপনাদের স্থান নেই। তাই বামন গোলার বিজেপি বন্ধুরা, তাদের সঙ্গে আমাদের কোন লড়াই নেই।' সঙ্গে হুঙ্কার, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্তিশালী করতে এই লোকসভা নির্বাচনে যাঁরা সাংসদ কোটার টাকা কমিশনে বিক্রি করে খায়, তাঁদের আমরা সমাজ থেকে ছুঁড়ে ফেলি। যাঁরা বিধায়ক কোটার টাকা কমিশনে বিক্রি করে খান, তাঁদের সমাজ থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নতুন সংসদ তৈরি করি আমরা।'  মালতিপুরের তৃণমূল বিধায়ক যে ভাবে বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন, তাতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে নানা মহলে।


আগেও বিতর্ক...
চলতি মাসের গোড়াতেই ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। সে বার মূল অভিযুক্ত, জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুলাল সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জেলা সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক। তবে এই ধারা নতুন নয়।  গত সেপ্টেম্বরেই যেমন, কলকাতা পুরসভায় শাসক-বিরোধী পক্ষের মারামারির পর বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা লিখেছিলেন,  'সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে পুরসভায় বিজেপি কাউন্সিলরদের যদি মারধর করা হতে পারে, লোকসভায় আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, অধিবেশন চলাকালীন তৃণমূলীদের প্রতি একই প্রথা প্রয়োগ হলে কেমন হয়?' সে নিয়েও বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। তবে বিতর্ক হলেও এই ধারায় যে ছেদ পড়ছে না, সেটা স্পষ্ট।


আরও পড়ুন:বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিখায় ভেসে উঠল যুবতীর দেহ ! আঁতকে উঠলেন কর্মচারীরা