করুণাময় সিংহ, মানিকচক : কাজ না করেই লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। কাঠগড়ায় প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। এনিয়ে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য তথা বিরোধী দলনেত্রী আনজুম সাগিরা। মালদার মানিকচকের এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান ও তৃণমূল নেত্রী মনিরা খাতুন। ড্রেন-রাস্তা সংস্কার না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ঘটনার তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন মালদার জেলাশাসক।


মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুরে রাস্তা-নর্দমা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়। তাতে দেখা যায়, সেই কাজ না করেই ভুয়ো বিল তৈরি করে টাকা তুলে নিয়েছেন প্রাক্তন প্রধান। এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী আনজুম সাগিরা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের লিখিত অভিযোগ করেছেন মানিকচকের বিডিওর কাছে। অভিযোগ, নর্দমা সংস্কারের কাজ না করেই প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ভুয়া বিল তুলেছেন প্রাক্তন প্রধান।


এনায়েতপুরের মীরাগ্রাম, মোমিনপাড়া, এনায়েতপুর, নোয়াদা, মোহনা এই পাঁচটি সংসদে নর্দমা সংস্কারের কোনও কাজই হয়নি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গত ১৪ অগাস্ট প্রাক্তন প্রধান তাঁর মেয়াদের একেবারে শেষ সময়ে পাঁচ লক্ষ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন। সরকারি খাতা অনুযায়ী, গত ২০২১ সালে নর্দমা সংস্কারের কাজ দেখানো হলেও, বিল প্রদান করা হয়েছে চলতি বছরের অগাস্ট মাসে। এমনকী বিল প্রদানের দিন ১৪ অগাস্ট, সেই দিনের ছবি দিয়ে জিও ট্যাগ করা হয়েছে বলে দাবি বিরোধী দলনেত্রীর। আরও জানা গেছে, দু'টি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ না করেই আনুমানিক দুই লক্ষ টাকার বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ জমা হওয়ার পর তড়িঘড়ি গত ২০ অক্টোবর নতুন করে ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করে অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা। যদিও এই রাস্তা নির্মাণের টাকা গত ১৪ অগাস্ট তুলে নেওয়া হয়েছে। 


আনজুম সাগিরা বলেন, 'কোন কাজ না করেই টাকা তুলেছেন উনি। তাই আমি বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।'


এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান তপতী মজুমদার বলেন, 'আমার সময়কালে এই ধরনের কোনও কাজ হয়নি। আমার হাতে এই ধরনের কোনও ভুয়ো বিল পাস হয়নি।'


প্রাক্তন প্রধান মনিরা খাতুন বলেন, 'মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। কাজ হয়েছে, তবে বিল হয়েছে। নিয়ম মেনে কাজ করা হয়েছে।'


এনিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন দক্ষিণ মালদার জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, 'গোটা রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের দুর্নীতি চলছে। মানিকচক ব্লকে দুর্নীতি যখন সামনে এসেছে তখন একটু একটু করে কাজ করছে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। আমরা তদন্ত চাই।'


জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, 'কংগ্রেসের কিছু নেই। ভোটে বিজেপি আর সিপিএমের দালালি করে তৃণমূলকে হারানোর চেষ্টা করেছে। যদি কোনও অভিযোগ থাকে, বিডিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।'


জেলাশাসক নীতিন সিঙ্গানিয়া জানান, ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।