করুণাময় সিংহ, মালদা: বয়স মাত্র ৪ বছর। একরত্তি ফুটফুটে শিশু। যাদের মুখ দেখলেই মায়া জন্মায়, তার উপরই নাকি অমানবিক অত্যাচার। শিউরে ওঠা ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়েছে নেট মহলে। একইসঙ্গে উঠেছে নিন্দার ঝড়।


৪ বছরের শিশুর ওপর অত্যাচার


বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে পরিচারিকা বা গৃহশিক্ষকের হাতে শিশু নির্যাতনের কিছু ছবি মাঝে মাঝে সামনে আসে। কিন্তু আজ সকলের সামনে শিশু নির্যাতনের যে ভিডিও ভাইরাল হতে দেখা যায়, তাকে ভয়ঙ্কর বললেও বোধ হয় কম বলা হয়! যদিও ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। মালদার বামনগোলার এক বাসিন্দা তাঁর সন্তানের বিরুদ্ধে এই নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। 


এককথায় বলতে গেলে ৪ বছরের বাচ্চাটিকে পেন্ডুলামের মতো ঝুলিয়ে পিছন থেকে লাথি মারা হচ্ছে। ভয়ঙ্কর! বাচ্চাটিকে ওপরে পা নীচে মাথা থাকা অবস্থায় গলায় পা তুলে মারা হচ্ছে।অবিশ্বাস্য! মারধরের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে রুটি বেলার বেলনও। তাই দিয়ে হাঁটুর নিচের জয়েন্টগুলোতে চলছে মারধর। নৃশংস ভিডিও দেখে শিউরে উঠছে সকলে। বাচ্চার গলা থেকে গামছায় একটা ভারী জিনিস ভরে কান ধরে উঠবোসও করানো হচ্ছে।


এ যেন শিশুকে থার্ড ডিগ্রি দিয়ে মজা লোটার চেষ্টা চলছে। সিলিং ফ্যান থেকে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এক শিশুকে। পা ওপরে, মাথা নীচে। সেই অবস্থায় কখনও মারা হচ্ছে লাথি, কখনও বেলন দিয়ে দমাদম পেটানো হচ্ছে তাকে। তাতেও মিটছে না রাগ। শিশুকে মেঝেয় ফেলে তার গলায় পা পর্যন্ত তুলে দিলেন এই ব্যক্তি। গলা থেকে ভারী জিনিস ঝুলিয়ে দিয়ে কখনও কান ধরে ওঠবোস। সঙ্গে বাছাই গালাগালির বন্যা। শিশু নির্যাতনের ভাইরাল এই ভিডিও। 


মালদার পরিবারের অভিযোগ


মালদার বামনগোলার এক বাসিন্দার দাবি, এই ছবি তাঁর চার বছরের সন্তানের ওপর নির্যাতনের। কর্মসূত্রে হায়দরাবাদের রাজীবনগরে থাকেন শিশুর বাবা-মা। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন তাঁরা। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে রোজ কাজে বেরিয়ে যান। 


শিশুর বাবার দাবি, যে অ্যাপার্টমেন্টে তাঁরা থাকেন, সেখানেই প্রতিবেশী প্রসেনজিৎ মণ্ডলের ফ্ল্যাটে সন্তানকে রেখে কাজে যেতেন তাঁরা। প্রসেনজিৎ মণ্ডলও মালদার বামনগোলারই বাসিন্দা। আর সেই প্রসেনজিতের বিরুদ্ধেই তাঁর ছেলের ওপর অকথ্য নির্যাতনের অভিযোগ করছেন বাবা।




প্রতিবেশীর দাবি


এমন ঘটনার পর অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ মণ্ডলের এক প্রতিবেশী দাবি করেন, 'ছেলেটি প্রথম দিকে ভাল ছিল। পরে ড্রাগে আসক্ত হয়ে পড়ে। সেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।'


এই ঘটনায় নির্যাতনকারীর মানসিক সুস্থতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, নির্বিকার চিত্তে যিনি গোটা ঘটনার ভিডিও করেছেন, তাঁর সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। শিশুর বাবার দাবি, ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই বেপাত্তা প্রসেনজিৎ। 


শিশু নির্যাতনের এই ভয়ঙ্কর ভিডিও যেন দুই ব্যক্তির মনুষ্যত্বের মরণকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।