করুণাময় সিংহ, মালদা: ভাঙন রোখার কাজ। তার জন্য প্রয়োজন টাকা। সেই বরাদ্দ নিয়েই এবার প্রকাশ্যে তৃণমূলের (TMC) অন্দরের মতপার্থক্য। মালদার মানিকচকে ভাঙন-রোধে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ নিয়ে সামনে এল মন্ত্রী (Minister) ও তৃণমূল (TMC MLA) বিধায়কের মতপার্থক্য। একদিকে বিধায়কের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী বরাদ্দ করেছেন ৪২ কোটি টাকা। অন্যদিকে, টাকার অঙ্ক নিয়ে আলাদা মত জানিয়েছেন সেচ প্রতিমন্ত্রী। শাসক দলের অন্দরেই এমন ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। মালদায় (Malda) গঙ্গা ভাঙন নিয়ে ভোগান্তি নতুন নয়। বিশেষ করে মানিকচকে বারবার ভাঙনের সমস্যা পড়েন বাসিন্দারা। সেখানেই ভাঙন রোখার জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু কত টাকা? সেই প্রশ্নেই এবার সামনে এল রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়কের আলাদা আলাদা দাবি।
কার কী দাবি:
মানিকচকের তৃণমূল বিধায়কের দাবি, ভাঙন রোধে ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উল্টোদিকে জেলারই আর এক তৃণমূল বিধায়ক ও সেচ প্রতিমন্ত্রীর দাবি, বরাদ্দ হয়েছে হয়েছে ৭ কোটি টাকা। মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, 'ভাঙন-রোধে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন ভাঙন (Erosion) রোধের জন্য। কাজ শুরু হবে।' অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক ও সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'মানিকচকে ভাঙন-রোধে কাজের জন্য ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বর্ষার সময় কাজ হবে না। বর্ষা গেলে স্থায়ী কাজ হবে।'
মানিকচকে গঙ্গা ভাঙনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এবারও পাড় ভাঙতে শুরু করেছে নদীর। নদীর গ্রাসে যাচ্ছে চাষের জমি। বাড়ি-ঘর, বাস্তুজমি হারিয়ে ফেলে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। মানিকচকের বাসিন্দা আরশেদ আলি বলেন, '২-৩ দিনে ৪০০ মিটারের মতো তলিয়ে গিয়েছে। মাত্র এক-দেড়শো মিটার দূরে বাঁধ। ভয়ে রয়েছি।' রবিবার মানিকচকের ভাঙন-কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।
বিজেপির কটাক্ষ:
ভাঙন-রোধে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ নিয়ে মন্ত্রী ও শাসকদলের বিধায়কের মতপার্থক্য সামনে আসায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি (BJP)। বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, 'ভাঙন-রোধের কাজ নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে বরাদ্দ অর্থ নিয়ে দ্বিমত হয়েছে। আসলে তৃণমূল উন্নয়ন করে না। দুর্নীতি, লুঠপাট করে।'
তৃণমূলের দাবি:
মালদার জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, 'কেন্দ্রের উদাসীনতার জন্য এই বিপর্যয়। আর্থিক সঙ্কট সত্ত্বেও রাজ্য সরকার উন্নয়ন করছে। ভাঙন রোধের কাজও হচ্ছে।'
আরও পড়ুন: 'কোমরে দড়ি বেঁধে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা উচিত', অনুব্রত ইস্যুতে বিস্ফোরক শুভেন্দু-সুজনরা