করুণাময় সিংহ, মালদা: ফের বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিলেন শাসক নেতা। গাছে বেঁধে রাখার নিদান দেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে। 'আগামী দিনে আর মানুষ ঠকানোর রাজনীতি চলবে না। গ্রামের মানুষরা রাস্তায় ধরে আপনাদের গাছের সঙ্গে বেঁধে জবাব চাইবে', হুঙ্কার আব্দুর রহিম বক্সীর। সঙ্গে সংযোজন, 'পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ মানুষের জন্য আপনারা কী করেছেন, জবাব চাইবেন তাঁরা। 'আপনাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে মানুষ।' দলে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে এসব বলছেন, পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও।
বার বার এক অভিযোগ..
বিরোধীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির অভিযোগ রাজ্য়ের শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে এই প্রথম নয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই বাঁকুড়ায় দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির জনসভা থেকে সুকান্ত মজুমদারকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। 'তৃণমূল কর্মীরা হাত তুললে হাসপাতালে জায়গা হবে', মঞ্চ থেকে হুমকি দিয়েছিলেন তালডাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। বিজেপির কটাক্ষ, 'তৃণমূলের নেতারা কুরুচিকর মন্তব্য করে এখন দলে জায়গা পেতে চাইছেন।' বস্তুত, এই ঘটনার আগে, বেশ কয়েক দিন ধরেই দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে গিয়ে কখনও বিডিও আবার কখনও থানার পুলিশ আধিকারিকদের হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছিল বাঁকুড়ার তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তীকে। তবে ইন্দপুরের আড়ালডিহি গ্রামে দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে উপলক্ষ্য়ে সভায় এই ভাষাতেই বিজেপিকে আক্রমণ শানান তৃণমূলের বিধায়ক। পরের মাসেই তৃণমূল নেতা জটিলেশ্বর মণ্ডলের মুখে শোনা যায়, 'তৃণমূল কর্মীরা বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ান, তাই দাপিয়ে বেড়াতে পারে। হাইকম্যান্ড বলেছে ভোট করতে হবে, নইলে আমি জটিলেশ্বর মণ্ডল। আমি কেমন খেলোয়াড়, আপনাদের দেখিয়ে দিতাম'। এপ্রিল মাসে আবার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "যদি বাপের বেটা হয়ে থাকিস তবে সোনামুখীতে একবার পা দিয়ে দেখা। যদি পা দুটো ভেঙে দিতে না পারি তবে তৃণমূল করা ছেড়ে দেব।" বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র উদ্দেশে এই বার্তা ছিল তাঁর, এমনই অভিযোগ ওঠে। তবে পিছিয়ে নেই বিরোধী শিবিরের বিধায়করা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল নেতাদের জুতো মারার নিদান দিয়েছিলেনন বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারও। কোনও তৃণমূল নেতা যদি চোখ রাঙানি দেখায় এবং তাঁদের তাবিদার দেখাতে আসে তাহলে তাঁদের জুতো খুলে সপাটে মারার নিদান দিয়েছিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক।