করুণাময় সিংহ, মালদা: হরিশ্চন্দ্রপুরে স্বামীকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ। এলাকাবাসীর তত্পরতায় সিঁড়ির নীচ থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার। গ্রেফতার মৃতের স্ত্রী ও মৃতের পিসতুতো ভাই। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কই কি কাড়ল প্রাণ? পথের কাঁটা সরাতেই স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের হাতে খুন হতে হল গৃহকর্তাকে? মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে স্বামীকে খুন ও দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগের ঘটনায় উঠে আসছে এমনই প্রশ্ন! মৃত বছর ৪০-এর রাম মুসোহার পেশায় রঙের মিস্ত্রি ছিলেন।
কীভাবে সামনে এল গোটা ঘটনা? হরিশ্চন্দ্রপুরের ডেলি মার্কেট এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ, মৃতের স্ত্রী পঞ্চমী মুসোহার এবং মৃতের পিসতুতো দাদা মনোজ রামকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভাড়া করার জন্য গাড়ি থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। কিন্তু কী কারণে গাড়ি ভাড়া করতে চাইছেন, জিজ্ঞাসা করা হলে দু’জনের মন্তব্যেই অসঙ্গতি মেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পড়েন।
তখনই সিঁড়ির নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় রাম মুসোহারের দেহ! এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। গ্রেফতার করা হয়, মৃতের স্ত্রী ও মৃতের পিসতুতো দাদাকে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, প্রথমে ভারী কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাসরোধ করা হয়।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, খুনের পর দেহ লোপাট করতেই গাড়ির খোঁজ করা হচ্ছিল। মৃতের ছেলে বাপি মুসোহার জানিয়েছেন, বাড়িতে ছিলাম না। জানতে পারি বাবাকে খুন করা হয়েছে। বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত।
কিন্তু কী কারণে খুন করা হল এই ব্যক্তিকে? নেপথ্যে উঠে আসছে মৃতের স্ত্রী ও মৃতের পিসতুতো দাদার মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা! প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মৃতের পিসতুতো দাদা, ধৃত মনোজ রাম আগে দিল্লিতে থাকতেন। মাস ছয়েক আগে রাজধানী থেকে ফিরে তিনি ভাইয়ের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন।
আর সেই সময়ই মৃতের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। মৃতের প্রতিবেশী আব্দুল জব্বারের কথায়, মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল দাদার। এর আগেও শুনেছি। সেই কারণেই খুন বলে মনে করছি।মালদার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই খুন কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।