করুণাময় সিংহ, হরিশ্চন্দ্রপুর(মালদা) : লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও স্বাস্থ্য সাথি প্রকল্পের ফর্ম লুটপাট। ঘটনার জেরে চরম বিশৃঙ্খলা। প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। হরিশ্চন্দ্রপুরের খিজিরিয়া বাঙ্গরুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ফর্ম বিতরণ করা হচ্ছিল এই স্কুল থেকে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ফর্ম না পাওয়ায় বিক্ষোভ ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। এরপর ফর্ম নিয়ে এলে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এর আগে মালদার চাঁচলে প্রথম দিনের দুয়ারে সরকার শিবিরে ভিড় উপচে পড়েছিল। "লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার"-এ আবেদন করতে এসে ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক মহিলা। তড়িঘড়ি তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম জমা দিতে গিয়ে মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ির ছবি দেখা যায় চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনে। এর পরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম তোলাকে কেন্দ্র করে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায় পুরাতন মালদার সাহাপুর হাইস্কুলে। সেখানে ভিড়ের চাপে আহত হন কয়েকজন মহিলা। কে আগে লাইনে দাঁড়াবেন, তারজন্যই ছুট লাগিয়েছিলেন মহিলারা। হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে গিয়ে আহত হন কয়েকজন। আহত ৫ মহিলাকে মৌলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রেখে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যে চালু হচ্ছে এই প্রকল্প। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনের পাশাপাশি, দুয়ারে সরকার প্রকল্পেও এজন্য আবেদন করা যাবে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে জেনারেল ক্যাটেগরি পরিবারের কর্ত্রীকে মাসিক ৫০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবারের কর্ত্রীকে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, যোগ্য জেনারেল কাস্ট পরিবার বছরে ৬ হাজার টাকা ও SC, ST এবং OBC পরিবার বছরে ১২ হাজার টাকা করে পাবে। এর ফলে উপকৃত হবেন ১ কোটি ৬০ লক্ষ মহিলা।
এই পরিস্থিতিতে আরও ক্যাম্প বাড়ানোর দাবি ওঠে। এনিয়ে আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে। প্রচুর ভিড় হচ্ছে। ২২ হাজার ক্যাম্প চলছে। কিন্তু ভিড় করার দরকার নেই, আরও ক্যাম্প বাড়াব, দরকার হলে সময়সীমাও বাড়াব। যাঁরা যোগ্য তাঁরা অবশ্যই প্রকল্পে সুবিধা পাবেন।