করুণাময় সিংহ, মালদা: ফের প্রকাশ্যে দলের অন্দরের কাজিয়া। দলের বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির মধ্যে সমস্যা ছিলই। এবার তাতে সুর চড়ালেন খোদ জেলা সভাপতিও।


কী ঘটনা:
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে মালদহের রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখার্জি এবং রতুয়ার ব্লক সভাপতি ফজলুর হকের কাজিয়া। কয়েক মাস আগে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন ঘিরে আলাদা কর্মসূচি নেন রতুয়ার তৃণমূল  বিধায়ক ও ব্লক সভাপতি। সেই সমস্যা যে মেটেনি ফের প্রমাণ মিলল। এবার বিধায়কের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন রতুয়ার ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুর হক। তিনি বলেন, '৮৪ বছর বয়সে সমর মুখার্জির পাগলামি দলটাকে শুধু ধ্বংস করবে না, আরও ক্ষতি করছে। উনি দলটাকে শেষ করবেন। তাঁর সঙ্গে সঙ্গ দিচ্ছেন জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী।' ব্লক সভাপতি নিজের দলের জেলা সভাপতিকে নিশানা করায় দলের অভ্যন্তরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।


কেন এই সমস্যা:
২০১১ সাল থেকে মালদার রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি ফজলুর হক। অন্যদিকে, ২০১৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর, গত বিধানসভা ভোটে ঘাসফুলের প্রতীকে রতুয়া থেকে জেতেন সমর মুখোপাধ্যায়। তৃণমূল ব্লক সভাপতির অভিযোগ, তাঁকে কোনও কর্মসূচিতে ডাকেন না রতুয়ার বিধায়ক। এই কাজে তাঁকে মদত দিচ্ছেন জেলা সভাপতি। ফজলুর হকের দাবি, 'ওই লোকটা তৃণমূলে এসে তৃণমূলকে শেষ করার জন্য চেষ্টা করছেন। জেলা প্রেসিডেন্ট চাইছেন। সমর মুখোপাধ্যায় পরিষ্কার রহিম বক্সীকে বলছেন, ফজুলরকে যদি ডাকা হয় তাহলে তোমার মিটিংয়ে যাব না। আর বাকি কাউকে যেতে দেব না।'


পাল্টা দাবি বিধায়কের:
যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখার্জি, তিনি বলেন, 'ব্লক সভাপতি পদে নেই ফজলুর হক। সমর মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করেন ফজলুর। তিনি বিজেপির মাফিয়া।' বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীও। তিনি বলেন, 'দলকে মান্যতা না দিয়ে শৃঙ্খলা ভেঙে প্রকাশ্যে একথা বলছে। মনে করছি দলবিরোধী কাজ। প্রমাণ হলে দল ব্যবস্থা নেবে। উনি কদিন তৃণমূল করছেন?'


বিজেপির কটাক্ষ
গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ জেলা বিজেপির। উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, 'তৃণমূল হচ্ছে ইউজ এন্ড থ্রো পার্টি। দলের নেতাদের এরা ব্যবহার করে, সাফল্য এনে দিলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।'


আরও পড়ুন: লন্ডভন্ড বিয়েবাড়ির প্যান্ডেল, উড়ল স্কুলের চাল, বাঁকুড়ায় কালবৈশাখীর দোসর শিলাবৃষ্টি