করুণাময় সিংহ, মালদা :   মিজোরামে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় (Mizoram Rail Bridge Collapse) প্রাণ হারিয়েছিলেন এরাজ্য়ের ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক।  পশ্চিমবঙ্গে কাজের সুযোগ না থাকাতেই ভিন রাজ্য়ে কাজের খোঁজে যেতে হচ্ছে শ্রমিকদের বলে কটাক্ষ শাণিয়েছিলেন বিরোধীরা। এবার সেই সেতু-বিপর্যয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ গেল মালদার (Malda) এক পরিযায়ী শ্রমিকের।


মৃত তরুণের নাম ছোটু মোমিন। মানিকচকের এনায়েতপুরের বাসিন্দা ২১ বছরের মোমিন মাসদুয়েক আগে অসমের জোড়হাটে রেলের টাওয়ার বসানোর কাজে যান। পরিবারের দাবি, টাওয়ারে উঠে ওভারহেড তার লাগানোর সময় ওই শ্রমিক পড়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এখানে কাজ না পেয়েই বাইরে যেতে হয়েছিল বলে দাবি করেছে মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।

কিছুদিন আগের ঘটনা। ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে  বাংলার আরেক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয় গাজিয়াবাদে।  সেখানে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃতদের মধ্যে ২ জন সামশেরগঞ্জ ও একজন ফরাক্কার বাসিন্দা। মাস দুয়েক আগে  গাজিয়াবাদে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন সামশেরগঞ্জের পাহাড়ঘাটি এলাকার গোকুল মন্ডল, বেতবোনার শুভঙ্কর রায় এবং ফরাক্কার ইমামনগরের ইসরাইল শেখ। পরিবার সূত্রে খবর, তাঁরা একসঙ্গেই রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। শুক্রবার কাজ করার সময়  বিদ্যুৎসপৃষ্ট হন তিন শ্রমিক। সহকর্মীরা তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মর্মান্তিক খবর বাড়িতে পৌঁছতেই নেমে আসে শোকের ছায়া।  মৃত শ্রমিকদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রাজ্য সরকার ও দলের তরফে তিনটি পরিবারের হাতে অর্থ সাহায্যও তুলে দেন তিনি। 


মিজোরামের ঘটনার পরই পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্য়ুর ঘটনাকে হাতিয়ার করে, ফের এরাজ্য়ে কর্মসংস্থানের বেহাল দশার অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও একটি ঘটনা। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরও দেখা গিয়েছিল, এ রাজ্য থেকে কত মানুষ প্রতিদিন শ্রমিকের কাজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন। তখনও একই বিষয় আলোচনায় উঠে আসে।  


কেন ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে যেতে হয় বাংলার শ্রমিকদের? তাহলে কি বাংলায় কর্মসংস্থান নেই? এই প্রশ্ন আবার সামনে আসছে।   


আরও পড়ুন : 'বাজির কারখানা'য় তরল রাসায়নিক, স্টোনচিপ, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, কী তৈরি হত? কী বলছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা?