করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদার (Malda) মোথাবাড়ি সরকারি স্কুলে বাথরুমের দেওয়াল ভেঙে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার (Student Death) পর প্রকাশ্যে এল আরও একাধিক স্কুলের ভয়াবহ অবস্থা। স্কুলে খসে পড়ছে পলেস্তারা , স্কুল বিল্ডিংয়ের চারিদিকে ফাটল। যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে স্কুলের ক্লাসরুম। এই অবস্থায় বাঙ্গিটোলা স্কুলের ঘটনার আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস করছেন পড়ুয়ারা। এমনই শোচনীয় মালদার হবিবপুরের আইহো বালিকা বিদ্যালয় এবং মালদার চাঁচল ২ নং ব্লকের নেহালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। আইহো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইস্কুলের দুর্দশার জন্য আঙ্গুল তুলেছেন প্রশাসনের দিকে। অন্যদিকে স্কুলের দুর্দশার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন চাঁচলের প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক।
চাঁচোল ২ নং ব্লকের ভাকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে নেহাল পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়।এই প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। শতাব্দী প্রাচীন স্কুলে ধরেছে ফাটল, বেরিয়ে এসেছে লোহার রড। আগাছা ও কচুরিপানায় ঢেকেছে স্কুল।স্কুল পড়ুয়ারা জানান, 'ভয়ে ক্লাস করতে হয়। আমরা দেখেছি ক্লাশ রুমের দেওয়ালে ফাটল। ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। আমড়া চাই স্কুলটি যাতে ভালো হয়।' এক অভিভাবক রাইহানুল হক জানান, 'স্কুলটির পরিস্থতি খুবই খারাপ। ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করে। আমাদেরও ভয় হয় কখন কী হয় !' অন্যদিকে মালদার হবিবপুরে আইহো উচ্চ বিদ্যালয়ের আবস্থা বেহাল। স্কুল বহুদিন হলেও সংস্কারের অভাবে ধুকছে। ফলে ভয়ের মধ্যে ভাঙন ফাটল দেওয়ালের ক্লাস রুমে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। বিষয়টি স্কুল কতৃপক্ষকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। এই নিয়ে বেশ কয়েক মাস আগে পথ অবরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু এরপরেও কোনও সুরাহা হয়নি।
এক ছাত্রী জানান, 'বহুদিন ধরে আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে। রুমের মধ্যে আতঙ্কে ক্লাস করতে হয়। এই নিয়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এখনও একই পরিস্থিতি। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ মিশ্র জানান, 'পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। প্রশাসনকে জানিয়েছি বিষয়টি। বাঙিটোলার ঘটনার পরও ইতিবাচক কোনও ভূমিকা নেই। স্কুলগুলির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মালদা জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া। 'দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে', বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন, অখিলের বিতর্কিত মন্তব্য জের, রাজ্যপালকে চিঠি শুভেন্দুর
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মালদার মোথাবাড়িতে সরকারি স্কুলে বাথরুমের দেওয়াল ভেঙে ছাত্রের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছে আরও একজন। ছাত্রের মৃত্যুর পরেই মোথাবাড়ির বাঙ্গিটোলা হাইস্কুলে ভাঙচুর চালাল উত্তেজিত জনতা। ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। পাল্টা জনতার ছোড়া ইটের ঘায়ে জখম হলেন মোথাবাড়ি থানার ওসি-সহ ৭জন। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে টিফিন পিরিয়ডের পর বাথরুমে গিয়েছিল একাদশ শ্রেণির জিশান শেখ। সঙ্গে ছিল তাঁর বন্ধু জিশান মোমিন। আচমকাই তাদের উপর পড়ে বাথরুমের দেওয়াল। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। জিশান শেখকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।