করুণাময় সিংহ, মালদা: রতুয়ায় তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বিধায়কের নেতৃত্বে ভাঙচুর! বাজিতপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির অফিসে ভাঙচুর। ভাঙচুরের পর তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে মাছ লুঠেরও অভিযোগ। তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের। জলাশয় দখল-মুক্ত করতে গিয়েছিলাম, দাবি বিধায়কের। জেলা মৎস্য দফতরকে তদন্তের নির্দেশ মালদার জেলাশাসকের।
তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে রতুয়ার বিধায়কের দাদাগিরি! মৎস্যজীবীদের সাথে নিয়ে মাছ লুটপাট সমিতির অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য মালদার রতুয়া থানার রাঙ্গামাটিয়া জলকর(জলাশয়) এলাকায়। বিধায়কের নেতৃত্বে ভাঙচুর করা হয়েছে বাজিতপুর কলোনি ফিশারম্যান কো-অপারেটি সোসাইটির জলাশয়ের পারে থাকা সমস্ত কিছু বলেই অভিযোগ। সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা যাতে এই জলকর ব্যবহার করতে পারে সেই জন্যই দখল মুক্ত করা হললাশয় দাবি তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের। সোসাইটির তরফ থেকে রতুয়া থানায় বিধায়কের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ মালদার জেলা শাসকের।
মালদার রতুয়া থানার অন্তর্গত অবস্থিত রাঙ্গামাটিয়া জলকর। ৮৯ একর এই জলকর। সরকারি এই জলকর উচ্চ আদালতের নির্দেশ মত লিজ পেয়েছে বাজিতপুর কলোনি ফিশারম্যান কপোরেটিভ সোসাইটি। চলতি বছরের মে মাসে ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ মতই জল কর দখল করে ওই সোসাইটি। ২০৩১ সালের মে মাসে লিজ এর সময়সীমা শেষ হচ্ছে ওই সোসাইটির। এই লিজ বাবদ প্রতিবছর প্রায় ১৬ লক্ষ ২১ হাজার টাকা সরকারি রেভিনিউ দিতে ওই সোসাইটিকে। দখলদারি নেওয়ার পর প্রায় কোটি টাকার মাছ চাষ করেছে সোসাইটি কর্তৃপক্ষ। যার ফলে মাছ জোগানোর জন্য ঘর সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তৃণমূলের পতাকা হাতে এলাকার মৎস্যজীবীদের সাথে নিয়ে এমনই পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়কে। এই জল করার পাশে বানানো সোসাইটি কর্তৃপক্ষের ঘর ভেঙে ফেলা হয় পাশাপাশি সমস্ত কিছুর তুলে নিয়ে যায় লুটপাট করে বলে অভিযোগ বাজিতপুর কলোনি ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটি কর্তৃপক্ষের। এ প্রসঙ্গে সোসাইটির ম্যানেজার উজ্জ্বল কুমার দাস জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ মত এই জলকর লিজে তারা পেয়েছেন। সরকারি যে ধরনের নির্দেশ রয়েছে সমস্তটা অনুসরণ করে তারা এই জলকর মাছ চাষ করেছেন। হঠাৎ করে বিধায়ক সমর মুখার্জী লোকজনকে নিয়ে লুটপাট চালিয়েছে জলকরের দেখাশোনার জন্য যে ঘরটাও ভেঙে ফেলেছে। তাই বিধায়কের বিরুদ্ধে আমরা রতুয়া থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি।
আরও পড়ুন, 'সুপ্রিম কোর্টে যাক, আইনের কত জ্ঞান দেখা যাবে..' অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ কল্যাণের
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মৎস্যজীবীদের পেটে আঘাত করে বেশ কিছু মানুষ এর জলকর নিজেদের লাভে বিক্রি করে দিয়েছে। বাজিতপুর সোসাইটির সদস্যদের অন্ধকারে রেখে এই জলকর বিক্রি করে দিয়েছে উজ্জ্বল কুমার দাস নামে একজন ব্যক্তি।তাই মৎস্যজীবী ও বাজিতপুর সোসাইটির সদস্যরা সকলে মিলে এই জলকর দখল করেছে। এই ঘটনাই তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন মালদা জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরে এই জলপট নিয়ে সমস্যা চলছে। সমাধানের জন্য গতকাল এই নিয়ে রতুয়ায় বৈঠক হয়েছিল চাচল মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে। তারপর এই ঘটনা ঘটেছে। পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য মালদা মৎস্য দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।