করুণাময় সিংহ, হরিশ্চন্দ্রপুর (মালদা) : ভাতার আবেদনের জন্য শংসাপত্র জমা দিতেই পর্দা ফাঁস। 'পাড়ায় সমাধান' (Paray Samadhan) প্রকল্পে বিশেষভাবে সক্ষমদের শংসাপত্র জমা পড়তেই সামনে এল জালচক্র। বিডিওর কাছে হল পর্দা ফাঁস। পুলিশের জালে তিন প্রতারক। তাদের মধ্যে রয়েছে পুলিশেরই এক হোমগার্ড এবং তার জামাইবাবু (তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত)। অভিযোগ, এক বছর ধরে এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল প্রতারকরা। হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে বহু মানুষকে জাল শংসাপত্র দিয়েছে তারা । ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর শালদহ গ্রামে 'পাড়ায় সমাধান' প্রকল্পে এই প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌমেন মণ্ডল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ওই প্রকল্পে উপভোক্তারা তাঁদের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় বিশেষভাবে সক্ষম কিছু উপভোক্তা ভাতার আবেদনের জন্য শংসাপত্র জমা দেন। সেই শংসাপত্র দেখেই সন্দেহ হয় বিডিওর। তারপর খতিয়ে দেখেই জানা যায় সেই শংসাপত্রগুলি জাল। তারপরেই সামনে আসে ওই চক্রের কুকীর্তি। জানা যায়, এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পারো গ্রামের নূর আলম। সে মালদা পুলিশ লাইনে হোমগার্ড পদে কর্মরত। তার সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল কর্মী তার জামাইবাবু নাজিমূল হক এবং মামুন আলি । নাজিমূল হককে এলাকার মানুষ আটক করে। তারপরেই তাকে গ্রেফতার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এরপর নূর আলম এবং মামুন আলিকেও গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত, তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত, বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় এক বছর ধরে এই জাল চক্র চলছিল। হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হয়েছেন এদের কাছে। এমনকী বিশেষভাবে সক্ষম নয় কিন্তু ভাতা পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে অনেককে জাল শংসাপত্র করে দেওয়া হয়েছে। কারোর কাছে নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার টাকা, আবার কারোর কাছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল যে রাজ্যজুড়ে প্রতারণা চক্র চালাচ্ছে তা এখানে প্রমাণিত।
যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, প্রশাসন এখানে যথেষ্ট সক্রিয়। তাই এই চক্রের পর্দা ফাঁস হয়েছে।