করুণাময় সিংহ, হরিশ্চন্দ্রপুর : মুর্শিদাবাদের ভরতপুর, পুরুলিয়ার মানবাজারের পর এবার মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর। আবাস-তালিকা (Awas List) নিয়ে জনরোষের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় পদত্যাগ করলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। হরিশ্চন্দ্রপুর (Harischandrapur) ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বড়োই গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। এলাকার বিডিও-র কাছে ওই পঞ্চায়েত সদস্য পদত্যাগপত্র (Resignation Letter) জমা দিয়েছেন। যদিও পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন।


এর আগে রবিবার আবাস-তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগে গ্রামবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল সদস্য টিঙ্কর মহালদার। অভিযোগ ছিল, কাটমানি দিয়ে আবাস-তালিকায় নাম তোলা হয়েছে। এরপরই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের পদত্যাগ। দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছেন পদত্যাগী তৃণমূল সদস্য।


এদিকে এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। পদত্যাগ ছাড়া বাঁচার উপায় নেই বলে বিঁধেছে গেরুয়া শিবির। পাল্টা বিরোধীদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।


আবাস-ক্ষোভ অন্যত্রও-


আবাস-ক্ষোভের জের। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের ছায়া আলিপুরদুয়ারেও। আবাস-তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে। জনরোষের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় এবার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের টটপারা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা সঙ্গীতা বিশ্বাস। আবাস-দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও অফিসের সামনে অনশনে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরেক তৃণমূল সদস্য খোকন দেবনাথ। সোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল সদস্য সুদীপ চক্রবর্তী। দলীয় সদস্যদের একাংশের ক্ষোভে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল প্রধান। 


এদিকে আবাস-দুর্নীতিতে দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যর। কোচবিহারের গীতালদহে তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে হামলা ও মারধরের অভিযোগ। আহত পঞ্চায়েত সদস্য দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি।
যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর।


আবাস-ক্ষোভ হুগলিতেও। আবাস তালিকায় নাম নেই কাঁচা বাড়ির মালিকদের। অথচ কাটমানি দেওয়ায় পাকা বাড়ির মালিকদের আবাস-তালিকায় নাম রয়েছে। এই অভিযোগে হুগলির শ্রীরামপুরে বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। বিডিও অফিসের সামনে লোহার ব্যারিকেডের সামনে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয় বিক্ষোভকারীদের।


এই পরিস্থিতিতে চার জেলায় আবাস যোজনার কাজের গতি বাড়াতে নির্দেশ দিল নবান্ন। মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুরের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ। বুধবার পর্যন্ত ২ লক্ষ উপভোক্তা ছাড়পত্র পেয়েছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার উপভোক্তাকে ছাড়পত্র দিতে হবে, নির্দেশ নবান্নর।


আরও পড়ুন ; আবাস যোজনায় নাম দলের নেতার, পথে নেমে প্রতিবাদ তৃণমূলেরই