করুণাময় সিংহ, মালদা: যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ। রাস্তার উপর জায়গায় জায়গায় রয়েছে ছোট-বড় গর্ত। এমনিতেই গর্ত বাঁচিয়ে গাড়ি চালাতে, পথ চলতে সমস্যা হয়। তার মধ্যে বৃষ্টি হলে বেড়ে যায় বিপদও। কারণ জলে ভর্তি হয়ে যায় ওই ছোট-বড় গর্তগুলি। যার ফলে আরও সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। কারণ সেগুলি দেখে বোঝা যায় না গর্ত রয়েছে কি না। এমন পরিস্থিতিতে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থল মালদা জেলার মালতীপুর (Malatipur)। রাস্তার এই অবস্থায় প্রবল সমস্যায় ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের চিলা পাড়া ও লালগঞ্জ গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা।
প্রায়শই দুর্ঘটনা:
বাসিন্দার অভিযোগ এই রাস্তার জন্য়ই প্রতিদিন এই এলাকায় নানাভাবে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এমন রাস্তার জন্য রোজ জীবন হাতে করে নিয়ে চলতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সমস্যায় রয়েছে ওই এলাকার স্কুল পড়ুয়ারাও। অভিযোগ, একটু বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। গর্তে জল জমে ছোটখাটো জলাশয়ের রূপ নেয়। স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল স্থানীয় বাসিন্দাদের। বেহাল রাস্তা ঠিক করার দাবিতে অবশেষে অভিনব পদ্ধতিতে আন্দোলনে সামিল হলেন এলাকার বাসিন্দারা। রাস্তার জমা জলে মাছ ছেড়ে প্রতিবাদে সামিল হন মালতীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিলা পাড়া ও লালগঞ্জ গ্রামের শতাধিক বাসিন্দারা।
কী কী অভিযোগ:
গ্রামবাসীদের অভিযোগ,দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত এক কোদাল পর্যন্ত রাস্তায় মাটি পড়েনি। চিলা পাড়া গ্রামের আতাবুদ্দিনের বাড়ি থেকে নাজিমুদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা কঙ্কালসার অবস্থায় পড়ে আছে। এই রাস্তা দিয়ে দৈনিক প্রায় এক হাজার মানুষের যাতাযাত।বেহাল রাস্তার কারণে জনদুর্ভোগের শেষ নেই।কাঁচা রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে চলাচল অযোগ্য হওয়ায় অন্য এলাকার আত্মীয়-স্বজন এই গ্রামে আসে না। গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স ঢোকে না বলেও অভিযোগ। রোগী নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হয় না। প্রসূতি মা ও অসুস্থ রোগীকে বাঁশের তৈরি চাঙারিতে বসিয়ে অন্তত দুই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। বাড়িতে ঠিকমতো পৌঁছনো যায় না মাঠের উৎপাদিত ফসল। শুধু তাই নয়,বেহাল রাস্তার কারণে গ্রামের তরুণ-তরুণীদের বিয়েও ভেঙে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই রাস্তাটি ৬টি মৌজার ঢোকার রাস্তা। চাষের মরসুমে বহু চাষি কৃষিকাজের যাবতীয় জিনিস নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যান। তাঁদের সমস্যা হচ্ছে। প্রসূতি ও অসুস্থদের এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে।
মালদা (Malda) জেলা তৃণমূল (TMC) সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি বলেন, 'সব রাস্তাই হয়েছে। কিছু রাস্তা হয়নি। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না তাই কাজ হচ্ছে না।' চাঁচল ব্লক-২-এর বিডিও দিব্য জ্যোতি দাস বলেন, 'এই কাজ করার কথাই ছিল। ১০০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করার ভাবনা ছিল। কিন্তু এখন টাকা আসছে না, কাজ বন্ধ রয়েছে। অন্য কোনও তহবিল থেকে এই কাজ করা যায় কিনা দেখা হচ্ছে।'
আরও পড়ুন: জমির ভুয়ো নথি বানিয়ে প্রতারণা, দালালের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ